পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষরক্ষা ףרג বিনোদ । বলে কী দাদা ! তোমার বাড়িতে তো এ দণ্ডবিধি পূর্বে প্রচলিত ছিল না । চন্দ্রকাস্ত । না ভাই, কালক্রমে কতই যে হচ্ছে, কিছু বুঝতে পারছি নে । বিনোদ । এখন তা হলে তোমার ছুটি চলছে বলে। জীবনে এই বোধ হয় ডোমেসটিক সাভিসে তোমার প্রথম ফার্লো । চন্দ্রকাস্ত । ই রে, কিন্তু উইদাউট পে। বিহু, আমার দুঃখ তোরা বুঝতেই পারবি নে। তুই সেদিন বলছিলি, বিয়ে না করাটাই তোর মুখস্থ হয়ে গেছে। আমার ঠিক তার উলটাে । ওই স্ত্রীটিকে এমনই বিত্র অভ্যেস করে ফেলেছি যে, হঠাৎ বুকের হাড়-কখানা খসে গেলে যেমন একদম খালি ঠেকে, ওই স্ত্রীটি আড়াল হলেই তেমনি জগংটা যেন ফাটা বেলুনের মতো চুপসে যায়। বিনোদ । এখন উপায় কী ? চন্দ্রকাস্ত । মনে করছি, আমি উলটে রাগ করব। আমিও ঘর ছেড়ে তোর এখানেই থাকব। আমার বন্ধুদের মধ্যে তোকেই সে সবচেয়ে বেশি ভয় করে। তার বিশ্বাস, তুই আমার মাথাটি খেয়েছিস ! বিনোদ । তা বেশ কথা । কিন্তু আমাকে যে আবার শ্বশুরবাড়ি যেতে হচ্ছে। চন্দ্রকান্ত । কার শ্বশুরবাড়ি ? বিনোদ । আমার নিজের, আবার কার । চন্দ্রকান্ত । ( সানন্দে বিন্থর পৃষ্ঠে চপেটাঘাত করিয়া ) সত্যি বলছিস বিহু ? বিনোদ । স্ত্রীকে আনতে চলেছি, নিতান্ত লক্ষ্মীছাড়ার মতো থাকতে আর ইচ্ছে করছে না । চক্ৰকান্ত। কিন্তু, এতদিন তোর এ আক্কেল ছিল কোথায় ? যতকাল আমার সংসর্গে ছিলি এমন সব সংসংকল্পের প্রসঙ্গ তো শুনতে পাই নি, দুদিন আমার দেখা পাস নি আর তোর ধর্মবুদ্ধি এতদূর পরিষ্কার হয়ে এল ? বিনোদ । কিন্তু, চন্দরদী, বিপদ কী হয়েছে জান ? নিবারণবাবুর ষে-রকম মেজাজ দেখলুম, সহজে কমলকে আমার কাছে পাঠাতে রাজি হবেন না। তুমি তো র্তার ওখানে খেতে যাচ্ছ, আমার হয়ে একটু ওকালতি করতে হবে। চন্দ্রকান্ত। নিশ্চয় করব। কিন্তু, ওরা ষে বললে নিবারণবাবু এখানে এসেছেন। বিনোদ। এই খানিকক্ষণ হল তিনি চলে গেছেন, তুমি আর দেরি কোরে না। [ প্রস্থান