পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांझनांखुङ्ग ,, ৩১৭ মেলে, আর এই কান্না যদি অতি সহজেই থামে, তা হলে সকল প্রকার মারের চেয়ে অপমানের চেয়ে সে আমাদের বড়ো দুৰ্গতির কারণ হবে । নিজেকে আমরা নিজে ছোটো করে রাখব, আর অন্তে আমাদের বড়ো অধিকার দিয়ে প্রশ্ৰয় দেবে এই অভিশাপ বিধাতা আমাদের দেবেন না বলেই আমাদের এত দুঃখের পর দুঃখ । জাহাজের খোলের ভিতরটায় যখন জল বোঝাই হয়েছে তখনই জাহাজের বাইরেকার জলের মার সাংঘাতিক হয়ে ওঠে। ভিতরকার জলটা তেমন দৃপ্তমান নয়, তার চালচলন তেমন প্রচও নয়, সে মারে ভারের দ্বারা, আঘাতের দ্বারা নয়, এইজন্তে বাইরের ঢেউয়ের চড়-চাপড়ের উপরেই দোষারোপ করে তৃপ্তি লাভ করা যেতে পারে ; কিন্তু হয় মরতে হবে নয় একদিন এই স্ববুদ্ধি মাথায় আসবে ষে আসল মরণ ঐ ভিতরকার জলের মধ্যে, ওটাকে যত শীঘ্র পারা যায় সেঁচে ফেলতেই হবে । কাজটা যদি দুঃসাধ্যও হয় তবু এ কথা মনে রাখা চাই যে, সমুদ্র সেঁচে ফেলা সহজ নয়, তার চেয়ে সহজ, খোলের জল সেঁচে ফেলা। এ কথা মনে রাখতে হবে, বাইরে বাধাবিঘ্ন বিরুদ্ধতা চিরদিনই থাকবে, থাকলে ভালো বই মন্দ নয়— কিন্তু অস্তরে বাধা থাকলেই বাইরের বাধা ভয়ংকর হয়ে ওঠে। এইজষ্ঠে ভিক্ষার দিকে না তাকিয়ে সাধনার দিকে তাকাতে হবে, তাতে অপমানও যাবে, ফলও পাব। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬ শক্তিপূজা বাতায়নিকের পত্রে আমি শক্তিপূজার যে আলোচনা করেছি সে স সাময়িকপত্রে একাধিক লোকে প্রতিবাদ লিখেছেন। * আমাদের দেশে শিব এবং শক্তির স্বরূপ সম্বন্ধে দুটি ধারা দেখতে পাই । তার মধ্যে একটিকে শান্ত্রিক এবং আর-একটিকে লৌকিক বলা যেতে পারে । শান্ত্রিক শিব যতী, বৈরাগী। লৌকিক শিব উন্মত্ত উচ্ছৃঙ্খল। বাংলা মঙ্গলকাব্যে এই লৌকিক শিবেরই বর্ণনা দেখতে পাই। এমন-কি, রাজসভার কবি ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলে শিবের যে চরিত্র বর্ণিত সে আর্যসমাজসম্মত নয়। শক্তির যে শান্ত্রিক ও দার্শনিক ব্যাখ্যা দেওয়া যায় আমি তা স্বীকার করে নিচ্ছি। কিন্তু বাংলা মঙ্গলকাব্যে শক্তির ষে স্বরূপ বর্ণিত হয়েছে সে লৌকিক, এবং তার ভাব অন্তরূপ। সংসারে যারা পীড়িত, যার পরাজিত, অথচ এই পীড়া ও পরাজয়ের যারা