পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

828 - ब्रदौट्द्र-ब्रछनॉवलौ তার পর থেকে তিনি নদীপৰ্বত সমুদ্রপ্রান্তরে ষেধানেই ঘুরে বেড়িয়েছেন কোথাও আর তার প্রিয়তমকে হারান নি,—কেননা তিনি ষে সর্বত্রই, আর তিনি ষে আত্মার মাঝখানেই । ধিনি, আত্মার ভিতরেই তাকেই আবার দেশে দেশে দিকে দিকে সর্বত্রই ব্যাপক ভাবে দেখতে পাবার কত মুখ, যিনি বিশাল বিশ্বের সমস্ত বৈচিত্র্যের মধ্যে রূপরস গীতগন্ধের নব নব রহস্তকে নিত্য নিত্য জাগিয়ে তুলে সমস্তকে আচ্ছন্ন করে রয়েছেন তাকেই আত্মার অন্তরতম নিভৃতে নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করবার কত আনন্দ | এই উপলদ্ধি করার মন্ত্রই হচ্ছে গায় ত্রী । অন্তরকে এবং বাহিরকে, বিশ্বকে এবং আত্মাকে একের মধ্যে যোগযুক্ত করে জানাই হচ্ছে এই মন্ত্রের সাধনা এবং এই সাধনাই ছিল মহর্ষির জীবনের সাধনা ৷ জীবনের এই সাধনাটিকে তিনি তার উপদেশ ও বক্তৃতার মধ্যে ভাষার দ্বারা প্রকাশ করেছেন কিন্তু সকলের চেয়ে সম্পূর্ণ সৌন্দর্বে প্রকাশ পেয়েছে শাস্তিনিকেতন আশ্রমটির মধ্যে। কারণ, এই প্রকাশের ভার তিনি এক লা নেন নি। এই প্রকাশের কাজে একদিকে তার ভগবৎ-পূজায় উংসর্গকরা সমস্ত জীবনটি রয়ে গেছে, আর-একদিকে আছে সেই প্রাস্তর, সেই আকাশ, সেই তরুশ্রেণী,—এই দুই এখানে মিলিত হয়েছে, ভূভূব স্ব; এবং ধিয়: । এমনি করে গায়ত্ৰীমন্ত্র যেখানেই প্রত্যক্ষরূপ ধারণ করেছে, ধেখানেই সাধকের মঙ্গলপূর্ণ চিত্তের সঙ্গে প্রকৃতির শাস্তিপূর্ণ সৌন্দর্য মিলিত হয়ে গেছে সেইখানেই পুণ্যতীর্থ। আমরা যারা এই আশ্রমে বাস করছি, হে শান্তিনিকেতনের অধিদেবতা, আজ উংসবের শুভদিনে তোমার কাছে আমাদের এই প্রার্থনা, তুমি আমাদের সেই চেতনাটি সর্বদা জাগিয়ে রেখে দাও যাতে আমরা যথার্থ তীর্থবাসী হয়ে উঠতে পারি। গ্রন্থের মধ্যে কীট যেমন তীক্ষ ক্ষুধার দংশনে গ্রন্থকে কেবল নষ্টই করে তার সত্যকে লেশমাত্রও লাভ করে না, আমরাও যেন তেমনি করে নিজেদের অসংযত প্রবৃত্তিসকল নিয়ে এই আশ্রমের মধ্যে কেবল ছিদ্র বিস্তার করতে না থাকি, আমরা এর ভিতরকার আনন্দময় সত্যটকে যেন প্রতিদিন জীবনের মধ্যে গ্রহণ করবার জন্তে প্রস্তুত হতে পারি। আমরা ষে মুযোগ যে-অধিকার পেয়েছি অচেতন হয়ে কেবলই যেন তাকে নষ্ট করতে না থাকি । এখানে যে সাধকের চিত্তটি রয়েছে সে যেন আমাদের চিত্তকে উদ্বোধিত করে তোলে, ষে-মন্ত্রটি রয়েছে সে যেন আমাদের মননের মধ্যে ধ্বনিত হয়ে ওঠে ; জামরাও যেন আমাদের জীবনটিকে এই আশ্রমের সঙ্গে এমনভাবে মিলিয়ে যেতে পারি যে, সেটি এখানকার পক্ষে চিরদিনের দানস্বরূপ হয়। হে আশ্রমদেব, দেওয়া এবং পাওয়া বে