পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী عياد . গদাই । কবিতা লিখে পৃথিবীর কী উপকার হয় বলা শক্ত, কিন্তু এক-এক সময় নিজের কাজে লেগে যায় সন্দেহ নেই। যা হোক, এত রাগ কেন ? চন্দ্রকান্ত । শুনেছ তো সমস্তই ! আমাদের বিমুর তার স্ত্রীকে পছন্দ হচ্ছে না । গদাই । বাস্তবিক, এরকম গুরুতর ব্যাপার নিয়ে খেলা করাটা ভালো হয় নি। চন্দ্রকান্ত। বিহুটা যে এত অপদার্থ তা কি জানতুম ! একটা স্ত্রীলোককে ভালোবাসার ক্ষমতাটুকুও নেই। গদাই । আমি জানি, কবিতা লেখার চেয়েও সেটা সহজ কাজ । চন্দ্রকাস্ত। আমি ওর মুখদর্শন করছি নে । গদাই। তুমি তাকে ছাড়লে সে যে নেহাত অধঃপাতে যাবে। চন্দ্রকান্ত । না, তার সঙ্গে কিছুতেই মিশছি নে, পায়ে এসে ধরে পড়লেও না । তুমি ঠিক বলেছিলে গদাই, আজকাল সবাই যাকে ভালোবাসা বলে সেটা একটা স্বায়ুর ব্যামো – হঠাৎ চিড়িক মেরে আসে, তার পরে ছেড়ে যেতে ও তর সয় না । গদাই । সে-সব বিজ্ঞানশাস্ত্রের কথা পরে হবে, আপাতত আমার একটা কাজ করে দিতে হচ্ছে । চন্দ্রকান্ত । যে কাজ বল তাতেই রাজি আছি, কিন্তু ঘটকালি আর করছি নে । গদাই । ঐ ঘটকালিই করতে হবে । চন্দ্রকান্ত । ( ব্যগ্রভাবে ) কী রকম শুনি । গদাই । বাগবাজারের চৌধুরীদের বাড়ির কাদম্বিনী, তার সঙ্গে আমার – চন্দ্রকান্ত । ( উচ্চস্বরে ) গদাই, তোমার ও কবিত্ব । তবে তোমারও স্বায়ু বলে একটা বালাই আছে । গদাই । তা আছে ভাই । বোধ হয়, একটু বেশি পরিমাণেই আছে। অবস্থা এমনি হয়েছে ষে শিগগির আমার একটা সদগতি না করলে - চন্দ্রকান্ত । বুঝেছি। কিন্তু গদাই, আর স্ত্রীহত্যার পাতকে আমাকে লিপ্ত করিস নে । গদাই। কিছু ভেবো না ভাই। পাপ করেছে বিনোদ, তার রিডেম্পশন আমার দ্বারা । চন্দ্রকান্ত। ভ্যালা মোর দাদা ! আমি একৃখনি যাচ্ছি। চাদরখানা নিয়ে আসি । অমনি বড়োবউয়ের পরামর্শ টাও জানা ভালো । [ প্রস্থান অনতিবিলম্বে ছুটিয়া আসিয়া চন্দ্রকান্ত। বড়োবউ রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে । তোদের সংসর্গ