পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ Seవి মহন্তের দূরবর্তী চীৎকারশন্স মিশ্রিত হইয়া মন্দিরের সন্মুখস্থ পথে একটা তুমুল কলরব উখিত হইল। সহসা প্রাঙ্গণের মধ্যে একটা পদশব্দ শোনা গেল। জয়কালী পশ্চাতে ফিরিয়া দেখিলেন, ভূপৰ্যন্ত মাধবীলতা আন্দোলিত হইতেছে। সরোষকণ্ঠে ডাকিলেন, নলিন ৷” কেহ উত্তর দিল না। বুঝিলেন, অবাধ্য নলিন বন্দীশালা হইতে কোনোক্রমে পলায়ন করিয়া পুনরায় তাহাকে রাগাইতে আসিয়াছে। তখন অত্যস্ত কঠিনভাবে অধরের উপরে ওষ্ঠ চাপিয়া বিধবা প্রাঙ্গণে নামিয়া আসিলেন । লতাকুঞ্জের নিকট পুনরায় ডাকিলেন, "নলিন !” উত্তর পাইলেন না। শাখা তুলিয়া দেখিলেন, একটা অত্যন্ত মলিন শূকর প্রাণভয়ে ঘন পল্লবের মধ্যে আশ্রয় লইয়াছে। ষে লতাবিতান এই ইষ্টকপ্রাচীরের মধ্যে বৃন্দাবিপিনের সংক্ষিপ্ত প্রতিরূপ, যাহার বিকশিত কুসুমমঞ্জরীর সৌরভ গোপীবৃন্দের স্থগন্ধি নিশ্বাস স্মরণ করাইয়া দেয় এবং কালিন্দীতীরবর্তী স্থখবিহারের সৌন্দর্যস্বপ্ন জাগ্রত করিয়া তোলে— বিধবার সেই প্রাণাধিক যত্বের স্থপবিত্র নন্দনভূমিতে অকস্মাৎ এই বীভৎস ব্যাপার ঘটিল। পূজারি ব্রাহ্মণ লাঠি হস্তে তাড়া করিয়া আসিল । জয়কালী তৎক্ষণাৎ অগ্রসর হইয়া তাহাকে নিষেধ করিলেন এবং দ্রুতবেগে ভিতর হইতে মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ করিয়া দিলেন । অনতিকাল পরেই স্বরাপানে-উন্মত্ত ডোমের দল মন্দিরের দ্বারে উপস্থিত হইয়া তাহাদের বলির পশুর জন্ত চীৎকার করিতে লাগিল । জয়কালী রুদ্ধদ্বারের পশ্চাতে দাড়াইয়া কহিলেন, “যা বেটার, ফিরে যা ! আমার মন্দির অপবিত্র করিস নে ৷” ডোমের দল ফিরিয়া গেল। জয়কালী ঠাকুরানী যে র্তাহার রাধানাথ জীউর মন্দিরের মধ্যে অশুচি জন্তুকে আশ্রয় দিবেন, ইহা তাহারা প্রায় প্রত্যক্ষ দেখিয়াও বিশ্বাস করিতে পারিল না। এই সামান্য ঘটনায় নিখিল জগতের সর্বজীবের মহাদেবতা পরম প্রসন্ন হইলেন কিন্তু ক্ষুত্র পল্লীর সমাজনামধারী অতি ক্ষুত্র দেবতাটি নিরতিশয় সংস্থৰ হইয়া উঠিল। با ۰ هاد stt۹