পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষরক্ষা SHA বিনোদ । তাই নাকি ? চক্সকান্ত। আজ তোমার দৃষ্টিটা ছুটেছে যেন কোন মায়ামূগীর পিছু পিছু। গেছে তার পথ হারিয়ে । ওহে, আজকের হাওয়ায় তোমার গায়ে কারো ছোয়াচ লাগছে নাকি ? বিনোদ । কিসে ঠাওরালে ? চন্দ্রকান্ত । মুখের ভাবে । বিনোদ । ভাবটা কিরকম দেখছ ? চন্দ্রকান্ত । যেন ইন্দ্ৰধন্থ উঠেছে আকাশে, আর তারই ছায়াটা শিউরে উঠছে নদীর ঢেউয়ে । বিনোদ । বলে যাও । চন্দ্রকান্ত যেন আষাঢ়-সন্ধ্যাবেলায় জুইগাছের গাঠে গাঠে কুঁড়ি ধরল বলে, আর দেরি নেই । বিনোদ । আরো কিছু আছে ? চন্দ্রকান্ত | যেন— নব জলধরে বিজুরী-রেহ দ্বন্দ্ব পসারি গেলি । বিনোদ । থামলে কেন, বলে যাও । চন্দ্রকান্ত। যেন বাশিটি আজ ঠেকেছে এসে গুণীর অধরে। সত্যি করে বল ভাই, লুকোস নে আমার কাছে । বিনোদ । তা হতে পারে। একটা কোন ইশারা আজ গোধূলিতে উড়ে বেড়াচ্ছে, তাকে কিছুতে ধরতে পারছি নে । চন্দ্রকান্ত । ইশারা উড়ে বেড়াচ্ছে । সেটা প্রজাপতির ডানায় নাকি ? বিনোদ । যেন অন্ধ মৌমাছির কাছে রজনীগন্ধার গন্ধের ইশারা । চন্দ্রকান্ত । হায় হায়, হাওয়াটা কোন দিক থেকে বইছে, তার ঠিকানাই পেলে না ? বিনোদ । পোস্ট-জাপিসের ঠিকানাটা পাওয়া শক্ত নয় চন্দরদী ! কিন্তু স্বর্ণরেণু কোথায় আছে লুকিয়ে সেই ঠিকানাটাই— চন্দ্রকান্ত । সর্বনাশ করলে ! এরই মধ্যে স্বর্ণের কথাটা মনে এসেছে ? সাদা ভাষায় ওর মানে হচ্ছে পণের টাকা— তোমার রজনীগন্ধার গন্ধটা তা হলে ব্যাঙ্কশাল স্ত্রীটের দিক থেকেই এল বুঝি ? বিনোদ । ছিছি চন্দ্র, এমন কথাটাও তোমার মুখ দিয়ে বেরোল । আমি তুচ্ছ টাকার কথাই কি ভাবছি ?