পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8e e ब्रयौटज-ब्रछन्नांबलौ. উপায় করে তবে অন্ত কথা। এই বলে দুঃখনিবৃত্তিকেই তিনি পরম লক্ষ্য বলে তার থেকে মুক্তির পথে আমাদের ডাক দিলেন। কিন্তু কথা এই যে, একান্ত দুঃখনিবৃত্তিকেই তো মানুষ পরম লক্ষ্য বলে ধরে নিতে পারে না। সে যে তার স্বভাবই নয়। আমি যে স্পষ্ট দেখছি দুঃখকে অঙ্গীকার করে নিতে সে আপত্তি করে না। অনেক সময় গায়ে পড়ে সে দুঃখকে বরণ করে নেয় । আলপস পর্বতের দুর্গম শিখরের উপর একবার কেবল পদার্পণ করে আসবার জন্তে প্রাণপণ করা তার পক্ষে সম্পূর্ণ অনাবশ্বক, কিন্তু বিনা কারণে মানুষ সেই দুঃখ স্বীকার করতে প্রস্তুত হয়। এমন দৃষ্টান্ত ঢের আছে। তার কারণ কী ? তার কারণ এই যে, দুঃখের সম্বন্ধে মানুষের একটা স্পধর্ণ অাছে। আমি দুঃখ সইতে পারি। আমার মধ্যে সেই শক্তি আছে এ-কথা মানুষ নিজেকে এবং অন্তকে জানাতে চায় | আসল কথা, মানুষের সকলের চেয়ে সত্য ইচ্ছা হচ্ছে বড়ো হবার ইচ্ছ, স্বর্থী হবার ইচ্ছা নয়। আলেকজাণ্ডারের হঠাৎ ইচ্ছা হল দুর্গম নদীগিরি মরু সমূদ্র পার হয়ে দিগ্বিজয় করে আসবেন । রাজসিংহাসনের আরাম ছেড়ে এমন দুঃসহ দুঃখের ভিতর দিয়ে তাকে পথে পথে ঘোরায় কে ? ঠিক রাজ্যলোভ নয়, বড়ো হবার ইচ্ছা। বড়ো হওয়ার দ্বারা নিজের শক্তিকে বড়ো করে উপলব্ধি করা । এই অভিপ্রায়ে মানুষ কোনো দুঃখ থেকে নিজেকে বাচাতে চায় না । যে-লোক লক্ষপতি হবে বলে দিন রাত টাকা জমাচ্ছে—বিশ্রামের মুখ নেই, খাবার স্থখ নেই, রাত্রে ঘুম নেই, লাভক্ষতির নিরস্তর আন্দোলনে মনে চিন্তার সীমা নেই—সে কৗজন্যে এই অসহ কষ্ট স্বীকার করে নিয়েছে ? ধনের পথে যতদূর সম্ভব বড়ো হয়ে ওঠবার জন্তে । তাকে এ-কথা বলা মিথ্যা যে তোমাকে দুঃখনিবারণের পথ বলে দিচ্ছি। তাকে এ-কথাও বলা মিথ্যা যে ভোগের বাসনা ত্যাগ করে, অারামের আকাজক্ষা মনে রেখো না। ভোগ এবং আরাম সে যেমন ত্যাগ করেছে এমন আর কে করতে পারে। . বুদ্ধদেব যে দুঃখ-নিবৃত্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছেন, সে-পথের একটা সকলের চেয়ে বড়ে আকর্ষণ কী ? সে এই ষে, অত্যন্ত দুঃখ স্বীকার করে এই পথে অগ্রসর হতে হয়। এই দুঃখস্বীকারের দ্বারা মানুষ আপনাকে বড়ো করে জানে। খুব বড়োরকম করে, ত্যাগ, খুৰ বড়োরকম করে ব্রতপালনের মাহাত্ম্য মানুষের শক্তিকে বড়ো করে দেখায় বলে মানুষের মন তাতে ধাবিত হয় । I 章