পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N & R রবীন্দ্র-রচনাবলী ইন্দু। হা হা, চশমা আছে। আর, সব কথাতেই মুচকে মুচকে হাসে। ক্ষান্তমণি । তবে আমাদের ললিত চাটুজে, তাতে আর সন্দেহ নেই। ইন্দু। ললিত চাটুজ্জে না হয়ে যায় না। বাজি রাখতে পারি। ক্ষান্তমণি। কলুটোলার নৃত্যকালী চাটুজ্জের ছেলে। ছোকরাটি কিন্তু মন্দ নয় ভাই। এম. এ. পাস করে জলপানি পাচ্ছে । ইন্দু। জলপানি পাবার মতোই কুহারা বটে। তা ওদের ঘরে স্ত্রী পুত্র পরিবার কেউ নেই নাকি ? লক্ষ্মীছাড়ার মতো টো টো করে বেড়ায় কেন ? ক্ষাস্তমণি। স্ত্রী পুত্র থেকেই বা কী হয় ? ওর তো তবু নেই। বলে যে, রোজগার না ক’রে বিয়ে করবে না। ইন্দু। জানিস, ক্ষান্তদিদি, ওদের তিন জনের ছবিতে যেন তিন কাল মূর্তিমান । চন্দ্রবাবু অতীত, বিনোদবাবু বর্তমান, আর ললিতবাবু ভাবী। ক্ষান্তমণি । ভাবী ? কার ভাবী লো ? ইন্দু। সে কথাটা রইল ভবিষ্যতের গর্ভে । ক্ষান্তমণি। দেখ, ভাই ইন্দু, তোকে সত্যি করে বলি। তোরা তো আমাকে বঙ্কিমবাবুর বইগুলো পড়ালি, ভেবেছিলুম একটুও বুঝতে পারব না— কিন্তু বেশ লাগছে। ইন্দু। এই দেখ, মুশকিলে ফেললি তো । তোর মনটা এখন আয়েষা হয়ে দাড়িয়েছে, কিন্তু ওজনমতো জগতসিংহ পাবি কোথা ? ক্ষাস্তমণি । তা বলিস নে ইন্দু । আমি যেরকম মাপের আয়েষা সেরকম মাপের জগংসিংহও ঘরে মজুদ আছে। কিন্তু— ইন্দু। চাল-চলনটা দোরস্ত হয় নি। মনে মনে আয়েষা হয়েছ, ব্যবহারে আয়েষাগিরি করে উঠতে পারছ না । i. ক্ষান্তমণি । কতকটা তাই বটে। ইন্দু। প্র্যাক্টকাল এডুকেশনটা হয় নি আর-কি। কিছু দিন প্র্যাকটিস্ চাই। ক্ষান্তমণি। তোর ইংরিজি আমি বুঝতে পারি নে, ভাই। ইন্দু। আমার বক্তব্য হচ্ছে, বঙ্কিমের কাছে মন্ত্র পেয়েছ, আমার কাছ থেকে তার সাধনা পেতে হবে । ক্ষাস্তমণি। তোমার কাছ থেকে ? ইন্দু। আমার কাছ থেকে হলেই নিরাপদ হবে। মনুসংহিতার সঙ্গে दकिमबांबूद्र शिल রক্ষা করেই আমি তোমাকে শিক্ষা দেব। আজ এখনি হোক হাতে-খড়ি। আচ্ছ, এক কাজ করা যাক। মনে করে, আমি চন্দ্রবাবু, আপিস থেকে ফিরে এসেছি, খিদেয় প্রাণ