পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ Sఆe ইন্দ্রকুমার হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিলেন । চন্দ্রনারায়ণ গম্ভীর হইয়া রছিলেন, কিছু বলিলেন না। যুবরাজ বিরক্ত হইয়াছেন বুঝিয়া ইন্দ্রকুমার তৎক্ষণাৎ হাসি থামাইয়া তাহার কাছে গেলেন—মৃদুভাবে বলিলেন, "দাদা তোমার কী মত। আজ রাত্রে শিকার করিতে যাইবে কি।” চন্দ্রনারায়ণ কহিলেন, “তোমার সঙ্গে ভাই শিকার করিতে যাওয়া মিথ্য, তাহ হইলে নিতান্ত নিরামিষ শিকার করিতে হয়। তুমি বনে গিয়া যত জন্তু মারিয়া জান, আর আমরা কেবল লাউ কুমড়া কচু কাঠাল শিকার করিয়া আনি।” ইশা খাঁ পরম হৃষ্ট হইয়া হাসিতে লাগিলেন—সস্নেহে ইন্দ্রকুমারের পিঠ চাপড়াইয়া বলিলেন, “যুবরাজ ঠিক কথা বলিতেছেন পুত্র । তোমার তীর সকলের আগে গিয়া ছোটে এবং নির্ঘাত গিয়া লাগে। তোমার সঙ্গে কে পারিয়া উঠিবে।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “না না দাদা, ঠাট্ট নয়—যাইতে হইবে । তুমি না গেলে কে শিকার করিতে যাইবে।” যুবরাজ বলিলেন, “আচ্ছা চলে। আজ রাজধরের শিকারের ইচ্ছা হইয়াছে, উহাকে নিরাশ করিব না ।” সহাস্ত ইন্দ্রকুমার চকিতের মধ্যে স্নান হইয়া বলিলেন, “কেন দাদা, আমার ইচ্ছা হইয়াছে বলিয়া কি যাইতে নাই ।” - চন্দ্রনারায়ণ বলিলেন, “সে কী কথা ভাই, তোমার সঙ্গে তো রোজই শিকারে «-چster sf ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “তাই সেটা পুরাতন হইয় গেছে।” চন্দ্রনারায়ণ বিমৰ্ষ হইয়া বলিলেন, “তুমি আমার কথা এমন করিয়া ভুল বুঝিলে বড়ো ব্যথা লাগে।” ইন্দ্রকুমার হাসিয়া তাড়াতাড়ি বলিলেন, “না দাদা, আমি ঠাট্টা করিতেছিলাম । শিকারে যাইব না তো কী । চলো তার আয়োজন করি গে।” ইশা খাঁ মনে মনে কহিলেন, “ইন্দ্রকুমার বুকে দশটা বাণ সহিতে পারে, কিন্তু দাদার একটু সামান্ত-অনাদর সহিতে পারে না।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ শিকারের বন্দোবস্ত সমস্ত স্থির হইলে পরে রাজধর মান্তে আস্তে ইন্দ্রকুমারের স্ত্রী কমলাদেবীর কক্ষে গিয়া উপস্থিত। কমলদেবী হাসিয়া বলিলেন, “এ কী ঠাকুরপো। একেবারে তীরধনুক বৰ্মচর্ম লইয়া যে। আমাকে মারিবে নাকি।” של|8 ל