পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কালান্তর ২৬৯ অনেক বেশি। কারণ দুর্বলের সঙ্গে ব্যবহার করার মতে এমন দুৰ্গতিকর অার-কিছুই নাই। আমাদের সমাজ লোকসাধারণকে যে শক্তিহীন করিয়া রাখিয়াছে এইখানেই সে নিজের শক্তিকে অপহরণ করিতেছে। পরের অস্ত্র কাড়িয়া লইলে নিজের অস্ত্র নির্ভয়ে উচ্ছৃঙ্খল হইয়া উঠে— এইখানেই মানুষের পতন । আমাদের দেশের জনসাধারণ আজ জমিদারের, মহাজনের, রাজপুরুষের, মোটের উপর সমস্ত ভদ্রসাধারণের দয়ার অপেক্ষ রাখিতেছে, ইহাতে তাহারা ভদ্রসাধারণকে নামাইয়া দিয়াছে। আমরা ভৃত্যকে অনায়াসে মারিতে পারি, প্রজাকে অনায়াসে অতিষ্ঠ করিতে পারি, গরিব মূর্খকে অনায়াসে ঠকাইতে পারি ; নিম্নতনদের সহিত স্তায়ব্যবহার করা, মানহীনদের সহিত শিষ্টাচার করা নিতান্তই আমাদের ইচ্ছার পরে নির্ভর করে, অপর পক্ষের শক্তির পরে নহে, এই নিরস্তুর সংকট হইতে নিজেদের বঁাচাইবার জন্তই আমাদের দরকার হইয়াছে নিম্নশ্রেণীয়দের শক্তিশালী করা । সেই শক্তি দিতে গেলেই তাহীদের হাতে এমন একটি উপায় দিতে হইবে যাহাতে ক্রমে তাহারা পরস্পর সম্মিলিত হইতে পারে— সেই উপায়টিই তাহাদের সকলকেই লিখিতে পড়িতে শেখানে । )\లిసి लज्जांशे८झब्र भूल অগ্রহায়ণের সবুজপত্রে সম্পাদক বর্তমান যুদ্ধ সম্বন্ধে যে কয়টি কথা বলিয়াছেন তাহ পাকা কথা, সুতরাং তাহাতে শাসও আছে রসও আছে । ইহার উপরে আর-বেশি কিছু বলিবার দরকার নাই— সেই ভরসাতেই লিখিতে বসিলাম । সম্পাদক বেশ করিয়া বুঝাইয়া দিয়াছেন, এবারকার যে লড়াই তাহ সৈনিকে বণিকে লড়াই, ক্ষত্রিয়ে বৈশ্বে। পৃথিবীতে চিরকালই পুণ্যজীবীর পরে অস্ত্রধারীর একটা স্বাভাবিক অবজ্ঞা আছে— বৈশ্বের কর্তৃত্ব ক্ষত্রিয় সহিতে পারে না। তাই জর্মনি আপন ক্ষত্ৰতেজের দৰ্পে ভারি একটা অবজ্ঞার সহিত এই লড়াই করিতে লাগিয়াছে। যুরোপে যে চার বর্ণ অাছে তার মধ্যে ব্রাহ্মণটি তার যজন যাজন ছাড়িয়া দিয়া প্রায় সরিয়া পডিয়াছেন। ষে খৃস্টসংঘ বর্তমান যুরোপের শিশু বয়সে উচু চেকিতে বসিয়া বেত হাতে গুরুমহাশয়গিরি করিয়াছে আজ সে তার বয়ঃপ্রাপ্ত শিন্তের দেউড়ির কাছে বসিয়া থাকে— সাবেক কালের খাতিরে কিছু তার বরাদ্দ বাধা আছে কিন্তু তার সেই