পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఎ ట রবীক্স-রচনাবলী ভাবেই মেনে নিয়েছিলেম। কোনোরকম আপত্তি করাটাই লজ্জার বিষয় ব’লে মনে করতেম । মেয়াদ পুরে হবার কিছু পূর্বেই ছুটি পাওয়া গেল। চারি দিকে খুব হাততালি। মনে হল যেন বাংলাদেশের হাওয়ায় বাজতে লাগল, ‘এনকোর । একৃসেলেন্ট, ’ মনটা খারাপ হল। ভাবলেম, যে ভুগল সেই কেবল ভূগল । আর, মিষ্টারমিতরে জনা:, রস পেলে দশে মিলে । সেও বেশিক্ষণ নয় ; নাট্যমঞ্চের পর্দা পড়ে যায়, আলো নেভে, তার পরে ভোলবার পালা । কেবল বেড়ি-হাতকড়ার দাগ যার হাড়ে গিয়ে লেগেছে তারই চিরদিন মনে থাকে । পিসিমা এখনো তীর্থে। কোথায়, তার ঠিকানাও জানি নে। ইতিমধ্যে পুজোর সময় কাছে এল । একদিন সকালবেলায় আমার সম্পাদক-বন্ধু এসে উপস্থিত। বললেন, “ওহে, পুজোর সংখ্যার জন্তে একটা লেখা চাই ।” জিজ্ঞাসা করলেম, “কবিতা ?” “আরে, না। তোমার জীবনবৃত্তান্ত ।” “সে তো তোমার এক সংখ্যায় ধরবে না ।” “এক সংখ্যায় কেন । ক্রমে ক্রমে বেরোবে ।” “সতীর মৃতদেহ স্থদর্শনচক্রে টুকরো টুকরো করে ছড়ানো হয়েছিল। আমার জীবনচরিত সম্পাদকি চক্রে তেমনি টুকরো টুকরো করে সংখ্যায় সংখ্যায় ছড়িয়ে দেবে, এটা আমার পছন্দসই নয়। জীবনী যদি লিখি গোটা আকারে বের করে দেব ।” “ন-হয় তোমার জীবনের কোনে-একটা বিশেষ ঘটনা লিখে দাও-না।” “কী-রকম ঘটনা ।” “তোমার সব-চেয়ে কঠোর অভিজ্ঞতা, খুব ষাতে ঝাজ ।” “কী হবে লিখে ।” “লোকে জানতে চায় হে ।” “এত কৌতুহল ? আচ্ছা, বেশ, লিখব।” “মনে থাকে যেন সব-চেয়ে যেটাতে তোমার কঠোর অভিজ্ঞতা ।” ‘অর্থাৎ, সব-চেয়ে যেটাতে দুঃখ পেয়েছি, লোকের তাতেই সব-চেয়ে মজা । আচ্ছা, বেশ। কিন্তু নামটামগুলো অনেকখানি বানাতে হবে ।” “তা তো হবেই। যেগুলো একেবারে মারাত্মক কথা তার ইতিহাসের চিহ্ন বদল না করলে বিপদ আছে । আমি সেইরকম মরিয়াগোছের জিনিসই চাই । পেজ প্রতি তোমাকে—”