পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী স্বপ্নশেষের ক্লাস্তি-বোঝাই রাতি— নিয়ে যাক যত দিনে-দিনে-জমা-করা প্রবঞ্চনায়-ভরা নিস্ফলতার সষত্ব সঞ্চয় । কুড়ায়ে কাটায়ে মুছে নিয়ে যাক, নিয়ে যাক শেষ করি ভাটার স্রোতের শেষ-খেয়া-দেওয়া তরী। নিঃশেষ যবে হয় যত কিছু ফাকি তবুও যা রয় বাকি— জগতের সেই সকল-কিছুর অবশেষেতেই কাটায়েছি কাল যত অকাজের বেলায় । মন-ভোলাবার অকারণ গানে কাজ ভোলাবার খেলায় । সেখানে যাহারা এসেছিল মোর পাশে তারা কেহ নয়, তারা কিছু নয় মানুষের ইতিহাসে। শুধু অসীমের ইশারা তাহারা এনেছে আঁখির কোণে, অমরাবতীর নৃত্যনৃপুর বাজিয়ে গিয়েছে মনে। দখিনহাওয়ার পথ দিয়ে তার উকি মেরে গেছে দ্বারে, কোনো কথা দিয়ে তাদের কথা যে বুঝাতে পারি নি কারে। রাজা মহারাজ মিলায় শূন্তে ধুলার নিশান তুলে, তারা দেখা দিয়ে চলে যায় যবে ফুটে ওঠে ফুলে ফুলে। থাকে নাই থাকে কিছুতেই নেই ভয়, যাওয়ায় আসায় দিয়ে যায় ওরা নিত্যের পরিচয় । অজানা পথের নামহারা ওরা লজ্জা দিয়েছে মোরে হাটে বাটে যবে ফিরেছি কেবল নামের বেসাতি করে। আমার দুয়ারে আঙিনার ধারে ওই চামেলির লতা কোনো দুদিনে করে নাই কৃপণতা । ওই-যে শিমুল, ওই-বে সজিনা, আমারে বেঁধেছে ঋণে— কত-ষে আমার পাগলামি-পাওয়া দিনে