পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ । මNA দুঃখই তোমার অন্তৰ্বামীর আসন । সেটি হরণ করবার অধিকার আমার নেই। কাল ভোরবেলা পর্যন্ত মেয়াদ নিয়েছি । এর মধ্যে যদি কোনো দৈববাণী আমার এই দ্বিধা মিটিয়ে দেয় তা হলে যা হয় একটা কিছু হবে। বাসনার প্রবল হাওয়ায় আমাদের পথ চলবার প্রদীপকে নিবিয়ে দেয় । তাই আমি মনকে শাস্ত রাখব— একমনে এই মন্ত্র জপ করব যে, তোমার কল্যাণ হোক ৷” o বোঝা যাচ্ছে দ্বিধা দূর হয়ে গেছে— দুজনার পথ এক হয়ে মিলেছে। মাঝের থেকে সিতাংশুর লেখা এই চিঠিগুলি আমারই চিঠি হয়ে উঠল— ওগুলি আজ অামারই প্রাণের স্তবমন্ত্র । কত কাল চলে গেল, বই পড়তে আর ভালো লাগে না। অনিলকে একবার কোনোমতে দেখবার জন্তে মনের মধ্যে এমন বেদনা উপস্থিত হল, কিছুতেই স্থির থাকতে পারলুম না। খবর নিয়ে জানলুম সিতাংশু তখন মস্থরি-পাহাড়ে । সেখানে গিয়ে লিতাংশুকে অনেকবার পথে বেড়াতে দেখেছি, কিন্তু তার সঙ্গে তো অনিলকে দেখি নি । ভয় হল পাছে তাকে অপমান ক’রে ত্যাগ করে থাকে। আমি থাকতে না পেরে একেবারে তার সঙ্গে গিয়ে দেখা করলুম। সব কথা বিস্তারিত করে লেখবার দরকার নেই। সিতাংশু বললে, “আমি তার কাছ থেকে জীবনে কেবল একটিমাত্র চিঠি পেয়েছি— সেটি এই দেখুন।” এই বলে লিতাংশু তার পকেট থেকে একটি ছোটো এনামেল- করা সোনার কার্ডকেস খুলে তার ভিতর থেকে এক-টুকরো কাগজ বের করে দিলে । তাতে লেখা আছে, ‘আমি চললুম, আমাকে খুজতে চেষ্টা কোরো না। করলেও খোজ পাবে না।’ সেই অক্ষর, সেই লেখা, সেই তারিখ এবং যে নীলরঙের চিঠির কাগজের অধোঁকখানা আমার কাছে এই টুকরোটি তারই বাকি অধোক । আষাঢ়, ১৩২৪ পাত্র ও পাত্রী ইতিপূর্বে প্রজাপতি কখনো আমার কপালে বলেন নি বটে, কিন্তু একবার আমার মানসপদ্মে বসেছিলেন। তখন আমার বয়স ষোলো। তার পরে, কাচা ঘুমে চমক লাগিয়ে দিলে যেমন ঘুম আর আসতে চায় না, আমার সেই দশা হল। আমার বন্ধুবান্ধবরা কেউ কেউ দারপরিগ্রহ ব্যাপারে দ্বিতীয়, এমন-কি, তৃতীয় পক্ষে প্রোমোশন