পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা পক্কশশুগন্ধহর মধ্যাহ্নের বায়ে । শু্যামার ঘোমটা যবে ফেলিল খসায়ে অকস্মাৎ, পরিপূর্ণপ্রণয়পীড়ায় ব্যথিত ব্যাকুল বক্ষ, কণ্ঠ রুদ্ধপ্রায়, বজ্ৰসেন কানে কানে কহিল শু্যামারে, ‘ক্ষণিক-শৃঙ্খল-মুক্ত করিয়া আমারে বাধিয়াছ অনন্ত শৃঙ্খলে । কী করিয়া সাধিলে দুঃসাধ্য ব্রত কহো বিবরিয়া । মোর লাগি কী করেছ জানি যদি প্রিয়ে, পরিশোধ দিব তাহা এ জীবন দিয়ে এই মোর পণ । বস্ত্র টানি মুখ’পরি, ‘সে কথা এখনো নহে? কহিল স্বন্দরী । গুটীয়ে সোনার পাল সুদূরে নীরবে দিনের অালোকতরী চলি গেল যবে অস্ত-অচলের ঘাটে, তীর-উপবনে লাগিল শু্যামার নৌকা সন্ধ্যার পবনে । শুক্ল চতুর্থীর চন্দ্র অস্তগতপ্রায়, নিস্তরঙ্গ শাস্ত জলে সুদীর্ঘ রেখায় ঝিকিমিকি করে ক্ষীণ আলো ; ঝিল্লিস্বনে তরুমুল-অন্ধকার কঁাপিছে সঘনে বীণার তন্ত্রের মতো । প্রদীপ নিবায়ে তরীবাতায়নতলে দক্ষিণের বায়ে ঘননিশ্বসিতমুখে যুবকের কাধে হেলিয়া বসেছে শু্যাম । পড়েছে অবাধে উন্মুক্ত স্বগন্ধ কেশরাশি, স্থকোমল তরঙ্গিত তমোজালে ছেয়ে বক্ষতল বিদেশীর, স্বনিবিড় তন্দ্রাজালসম । কহিল অক্ষুটকণ্ঠে তাম, ‘প্রিয়তম, তোমা লাগি যা করেছি কঠিন সে কাজ,