পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শারদোৎসব 'రిపి লক্ষেশ্বরের পুনঃপ্রবেশ লক্ষেশ্বর। কোন পোড়ারমুখো আমার কলম নিয়েছে রে । r [ কলম ফেলিয়া দিয়া সকলের প্রস্থান উপনন্দের প্রবেশ লক্ষেশ্বর। কী রে, তোর প্রভু কিছু টাকা পাঠিয়ে দিলে ? অনেক পাওনা বাকি । উপনন্দ । কাল রাত্রে আমার প্রভূর মৃত্যু হয়েছে। লক্ষেশ্বর। মৃত্যু! মৃত্যু হলে চলবে কেন ? আমার টাকাগুলোর কী হবে ? : উপনন্দ । তার তো কিছুই নেই। যে বীণা বাজিয়ে উপার্জন করে তোমার ঋণ শোধ করতেন সেই বীণাটি আছে মাত্র । , লক্ষেশ্বর । বীণাটি আছে মাত্র । কী শুভসংবাদটাই দিলে ! উপনদ । আমি শুভসংবাদ দিতে আসি নি। আমি এক দিন পথের ভিক্ষুক ছিলেম তিনিই আমাকে আশ্রয় দিয়ে তার বহু দুঃখের অন্নের ভাগে আমাকে মাহুষ করেছেন । তোমার কাছে দাসত্ব করে আমি সেই মহাত্মার ঋণ শোধ করব । লক্ষেশ্বর । বটে ! তাই বুঝি তার অভাবে আমার বহু দুঃখের অন্নে ভাগ বসাবার মতলব করেছ! আমি তত বড়ো গর্দভ নই।— আচ্ছা, তুই কী করতে পারিস বল দেখি । * , s উপনন্দ । আমি চিত্রবিচিত্র করে পুথি নকল করতে পারি। তোমার অন্ন আমি চাই নে । আমি নিজে উপার্জন করে যা পারি খাব-— তোমার ঋণও শোধ করব । লক্ষেশ্বর। আমাদের বীনকারটিও যেমন নির্বোধ ছিল ছেলেটাকেও দেখছি ঠিক তেমনি করেই বানিয়ে গেছে। হতভাগা ছোড়াটা পরের দায় ঘাড়ে নিয়েই মরবে। একএক জনের ওইরকম মরাই স্বভাব !— আচ্ছা বেশ, মাসের ঠিক তিন তারিখের মধ্যেই নিয়মমতে টাকা দিতে হবে । নইলে— * উপনন্দ । নইলে আবার কী ! আমাকে ভয় দেখাচ্ছে মিছে । আমার কী আছে যে তুমি আমার কিছু করবে ? আমি আমার প্রভুকে স্মরণ করে ইচ্ছা করেই তোমার কাছে বন্ধন স্বীকার করেছি। আমাকে ভয় দেখিয়ো না বলছি। লক্ষেশ্বর। না না, ভয় দেখাব না! তুমি লক্ষ্মীছেলে, সোনার চাদ ছেলে ! টাকাটা ঠিকমতো দিয়ে৷ বাবা ! নইলে আমার ঘরে দেবতা আছে, তার ভোগ কমিয়ে দিতে হবে— সেটাতে তোমারই পাপ হবে । [ উপনন্দের প্রস্থান