পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দতত্ত্ব Wー(tぬ বারবার শব্দটিকে জোর দিবার সময় আমরা বারে বারে’ বলি ; সংস্কৃত নিশ্চয়ার্থসূচক হি-যোগে ইহা নিম্পন্ন ; বারহি বারহি— বারই বারই– বারে বারে । একেবারে শব্দটিরও ওইরূপ ব্যুৎপত্তি। প্রাচীন বাংলায় কর্মকারকে ‘এ’ বিভক্তি যোগ ছিল, তাহা বাংলা কাব্যপ্রয়োগ দেখিলেই বুঝা যায় : লাজ কেন কর বধূজনে : কবিকঙ্কণ । করণ কারকেও ‘এ’ বিভক্তি চলে। যথা, পুজিলেন ভূষণে চন্দনে । ধনে ধান্তে পরিপূর্ণ। তিলকে ললাট শোভিত । বাংলায় সম্প্রদান কর্মের অনুরূপ । যথা, দীনে কর দান । গুরুজনে করে নতি । অধিকরণের তো কথাই নাই । * যাহা হউক, সম্বন্ধের চিহ্ন লইয়। প্রায় সকল কারকের কাজ চলিয়া গেল কিন্তু স্বয়ং সম্বন্ধের বেল কিছু গোল দেখা যায়। বাংলায় সম্বন্ধে ‘র’ আসিল কোথা হইতে । পাঠকগণ বাংল। প্রাচীনকাব্যে দেখিয়া থাকিবেন, তাহার যাহার প্রভৃতি শব্দের স্থলে তাকর যাকর প্রভৃতি প্রয়োগ কোথাও দেখা যায়। এই কর শব্দের ক লোপ পাইয়া র অবশিষ্ট রহিয়াছে, এমন অকুমান সহজেই মনে উদয় হয় । পশ্চিমি হিন্দির অধিকাংশ শাখায় ষষ্ঠীতে কে কী কে প্রভৃতি বিভক্তি যোগ হয় ; যথা, ঘোড়েক ঘোড়েকে ঘোড়েকে ঘোড়াকে । বাংলার সহিত যাহাদের সাদৃশু আছে নিম্নে বিবৃত হইল ; মৈথিলী – ঘোড়াকর ঘোড়াকের ; মাগধী – ঘোড়াকের ঘোড়ৱাকর ; মাড়োয়ারি— ঘোড়ারো ; বাংলা— ঘোড়ার । 噬 এই তালিকা আলোচনা করিলে প্রতীতি হয় কর শব্দ কোনো ভাষা সমগ্র রাখিয়াছে, এবং কোনো ভাষায় উহার ক অংশ এবং কোনো ভাষায় উহার র অংশ রক্ষিত হইয়াছে। প্রাকৃতে অনেক স্থলে ষষ্ঠী বিভক্তির পর এক অনাবশ্যক কেরক শব্দের যোগ দেখা যায় ; যথা, কসস কেরকং এদং পবহণং— কাহার এই গাড়ি, তুন্ধহং কেরউং ধন— তোমার ধন, জম্বকেরে হুংকারউয়ে মুহহু পড়ংতি তনাই – যাহার হুংকারে মুখ হইতে তৃণ পড়িয়া যায়। ইহার সহিত চাদ কবির ; ভীমহকরি সেন— ভীমের