পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Չա Ե. সোনার তরী শুনিতেছি ধ্বনি তব ; ভাবিতেছি, বুঝা যায় যেন কিছু কিছু মর্ম তার— বোবার ইঙ্গিতভাষা-হেন আত্মীয়ের কাছে । মনে হয়, অস্তরের মাঝখানে নাড়ীতে যে-রক্ত বহে, সেও যেন ওই ভাষা জানে, আর কিছু শেখে নাই। মনে হয়, যেন মনে পড়ে যখন বিলীনভাবে ছিকু ওই বিরাট জঠরে অজাত ভুবন-ভ্রণমাঝে,— লক্ষকোটি বর্ষ ধ’রে ওই তব অবিশ্রাম কলতান অস্তরে অস্তরে মুদ্রিত হইয়া গেছে ; সেই জন্মপূর্বের স্মরণ,— গর্ভস্থ পৃথিবীপরে সেই নিত্য জীবনস্পন্দন তব মাতৃহৃদয়ের— অতি ক্ষীণ আভাসের মতো জাগে যেন সমস্ত শিরায়, শুনি যবে নেত্র করি নত বসি জনশূন্য তীরে ওই পুরাতন কলধ্বনি । দিক হতে দিগন্তরে যুগ হতে যুগান্তর গনি তখন আছিলে তুমি একাকিনী অখণ্ড অকুল আত্মহারা ; প্রথম গর্তের মহা রহস্ত বিপুল না বুঝিয়া। দিবারাত্রি গৃঢ় এক স্নেহব্যাকুলত, গভিণীর পূর্বরাগ, অলক্ষিতে অপূর্ব মমতা, অজ্ঞাত আকাঙ্ক্ষারাশি, নিঃসস্তান শূন্ত বক্ষোদেশে নিরস্তর উঠিত ব্যাকুলি। প্রতি প্রাতে উষা এসে অকুমান করি যেত মহাসস্তানের জন্মদিন, নক্ষত্র রহিত চাহি নিশি নিশি নিমেষবিহীন । শিশুহীন শয়ন-শিয়রে । সেই অাদিজননীর জনশূন্ত জীবশুন্য স্নেহচঞ্চলত স্বগভীর, আসন্ন প্রতীক্ষাপূর্ণ সেই তব জাগ্রত বাসন, অগাধ-প্রাণের তলে সেই তব অজানা বেদনা অনাগত মহাভবিষ্যৎ লাগি, হৃদয়ে অামার যুগান্তর-স্মৃতিসম উদিত হতেছে বারম্বার । আমারো চিত্তের মাঝে তেমনি অজ্ঞাত ব্যথাভরে, তেমনি অচেনা প্রত্যাশায়, অলক্ষ্য স্থদুর তরে C: 이