পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રાન્ક রবীন্দ্র-রচনাবলী পুরবালার প্রবেশ জগত্তারিণী। কী আর বলব পুরো, এমন সোনার চাদ ছেলে । পুরবালা। তা জানতুম। নীর-নৃপর অদৃষ্টে কি খারাপ ছেলে হতে পারে। অক্ষয়। তাদের বড়দিদির অদৃষ্টের আঁচ লেগেছে আর-কি। পুরবালা । আচ্ছা, থামে। যাও দেখি, তাদের সঙ্গে একটু আলাপ করো গে ; কিন্তু শৈল গেল কোথায় । অক্ষয় । সে খুশি হয়ে দরজা বন্ধ করে পুজোয় বসেছে। খ্ৰীণ ও বিপিনের নিকট আসিয়৷ ব্যাপারটা কী রসিকদা, আজকাল তো খুব খাওয়াচ্ছ দেখছি। প্রত্যহ যাকে দু বেলা দেখছ তাকে হঠাৎ ভুলে গেলে ? রসিক। এদের নূতন আদর, পাতে যা পড়ছে তাতেই খুশি হচ্ছেন। তোমার আদর পুরোনো হয়ে এল, তোমাকে নতুন করে খুশি করি এমন সাধ্য নেই ভাই । অক্ষয় । কিন্তু শুনেছিলেম, আজকের সমস্ত মিষ্টান্ন এবং এ পরিবারের সমস্ত অনাস্বাদিত মধু উজাড় করে নেবার জন্যে দুটি অখ্যাতনামা যুবকের অভু্যদয় হবে— এরা তাদেরই অংশে ভাগ বসাচ্ছেন নাকি । ওহে রসিকদা, ভুল কর নি তো ? রসিক। ভুলের জন্যেই তো আমি বিখ্যাত। বড়োমা জানেন র্তার বুড়ে রসিককাক যাতে হাত দেবেন তাতেই গলদ হবে । অক্ষয় । বল কী রসিকদাদা। করেছ কী । সে দুটি ছেলেকে কোথায় পাঠালে ? রসিক। ভ্রমক্রমে তাদের ভুল ঠিকানা দিয়েছি । অক্ষয় । সে বেচারীদের কী গতি হবে। রসিক। বিশেষ অনিষ্ট হবে না। তারা কুমারটুলিতে নীলমাধব চৌধুরির বাড়িতে এতক্ষণে জলযোগ সমাধা করেছেন । বনমালী ভট্টাচার্য র্তাদের তত্ত্বাবধানের ভার নিয়েছেন। অক্ষয় । তা যেন বুঝলুম, মিষ্টান্ন সকলেরই পাতে পড়ল, কিন্তু তোমারই জলযোগটি কিছু কটু রকম হবে। এইবেল ভ্রম সংশোধন করে নাও। শ্ৰীশবাবু, বিপিনবাবু, কিছু মনে কোরো না— এর মধ্যে একটু পারিবারিক রহস্য আছে। শ্ৰীশ। সরলপ্রকৃতি রসিকবাবু সে রহস্য আমাদের নিকট ভেদ করেই দিয়েছেন। আমাদের ফাকি দিয়ে আনেন নি । বিপিন। মিষ্টাম্নের থালায় আমরা অনধিকার আক্রমণ করি নি, শেষ পর্যন্ত তার প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছি। অক্ষয় । বল কী বিপিনবাবু। তা হলে চিরকুমার-সভাকে চিরজন্মের মতে কঁাদিয়ে