পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা २७> গান বিরহে মরিব ব’লে ছিল মনে পণ— কে তোরা বাহুতে বাধি করিলি বারণ। ভেবেছিকু অশ্রুজলে ডুবিব অকুল-তলে কাহার সোনার তরী করিল তারণ। —প্রিয়ে, কাশীধামে বুঝিপঞ্চশর ত্রিলোচনের ভয়ে এগোতে পারেন না। পুরবালা। তা হতে পারে, কিন্তু কলকাতায় তো তার যাতায়াত আছে। অক্ষয় । তা আছে-- কোম্পানির শাসন তিনি মানেন না, আমি তার প্রমাণ পেয়েছি। تصم নৃপবালা ও নীরবালার প্রবেশ নীরবালা । দিদি । অক্ষয় । এখন দিদি বৈ আর কথা নেই, অকৃতজ্ঞ ! দিদি যখন বিচ্ছেদদহনে উত্তরোত্তর তপ্তকাঞ্চনের মতো শ্ৰী ধারণ করছিলেন তখন তোমাদের ক'টিকে সুশীতল করে রেখেছিল কে । নীরবালা। শুনছ দিদি । এমন মিথ্যে কথা ! তুমি যতদিন ছিলে না আমাদের একবার ডেকেও জিজ্ঞাসা করেন নি, কেবল চিঠি লিখেছেন আর টেবিলের উপর দুই পা তুলে দিয়ে বই হাতে করে পড়েছেন। তুমি এসেছ, এখন আমাদের নিয়ে গান হবে, ঠাট্ট হবে, দেখাবেন যেন— নৃপবালা । দিদি, তুমিও তো ভাই, এতদিন আমাদের একখানিও চিঠি লেখ নি। পুরবালা । আমার কি সময় ছিল ভাই। মাকে নিয়ে দিন রাত ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল । অক্ষয়। যদি বলতে তোদের ভগ্নীপতির ধ্যানে নিমগ্ন ছিলুম তা হলে কি লোকে নিন্দে করত । নীরবালা । তা হলে ভগ্নীপতির আস্পর্ধ আরও বেড়ে যেত। মুখুজ্জেমশায়, তুমি তোমার বাইরের ঘরে যাও-না। দিদি এতদিন পরে এসেছেন, আমরা কি ওঁকে নিয়ে একটু গল্প করতে পাব না। অক্ষয়। নৃশংসে, বিরহদাবদগ্ধ তোর দিদিকে আবার বিরহে জালাতে চাস ? তোদের ভগ্নীপতিরূপ ঘনকৃষ্ণ মেঘ মিলনরূপ মুষলধারাবর্ষণ-দ্বারা প্রিয়ার চিত্তরূপ লতানিকুঞ্জে আনন্দরূপ কিসলয়োদগম ক’রে প্রেমরূপ বর্ষায় কটাক্ষরূপ বিদ্যুৎ— নীরবালা । এবং বকুনিরূপ ভেকের কলরব—