পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চোখের বালি VIII মহেন্দ্র গর্জন করিয়া উঠিয়া কহিল, “মিথ্যা কথা । তুমি যদি ভদ্রলোকের মেয়েকে এমন অন্যায় সন্দেহের চোখে দেখ, তবে অন্তঃপুরে তোমার আসা উচিত নয়।” এমন সময় একটি থালায় মিষ্টান্ন সাজাইয়া বিনোদিনী হাস্যমুখে তাহ বিহারীর সম্মুখে রাখিল । বিহারী কহিল, “এ কী ব্যাপার। আমার তো ক্ষুধা নাই ।” বিনোদিনী কহিল, “সে কি হয়। একটু মিষ্টমুখ করিয়া আপনাকে যাইতেই হইবে।” বিহারী হাসিয়া কহিল, “আমার দরখাস্ত মঞ্জুর হইল বুঝি। সমাদর আরম্ভ হইল।” বিনোদিনী অত্যন্ত টিপিয়া হাসিল— কহিল, “আপনি যখন দেওর তখন সম্পর্কের যে জোর অাছে। যেখানে দাবি করা চলে সেখানে ভিক্ষণ করা কেন । আদর যে কাড়িয়া লইতে পারেন । কী বলেন, মহেন্দ্রবাবু।” মহেন্দ্রবাবুর তখন বাক্যস্ফীতি হইতেছিল না । বিনোদিনী । বিহারীবাবু, লজ্জা করিয়া থাইতেছেন না, না রাগ করিয়া ? আরকাহাকেও ডাকিয়া আনিতে হইবে ? বিহারী। কোনো দরকার নাই। যাহা পাইলাম তাহাই প্রচুর। বিনোদিনী । ঠাট্টা ? আপনার সঙ্গে পারিবার জো নাই। মিষ্টান্ন দিলেও মুখ दक श्ध्न नां । রাত্রে আশা মহেন্দ্রের নিকটে বিহারী সম্বন্ধে রাগ প্রকাশ করিল— মহেন্দ্র অন্ত দিনের মতো হাসিয়া উড়াইয়া দিল না— সম্পূর্ণ যোগ দিল । প্রাতঃকালে উঠিয়াই মহেন্দ্র বিহারীর বাড়ি গেল। কহিল, “বিহারী, বিনোদিনী হাজার হউক ঠিক বাড়ির মেয়ে নয়— তুমি সামনে আসিলে সে যেন কিছু বিরক্ত হয়।” বিহারী কহিল, “তাই না কি । তবে তো কাজটা ভালো হয় না। তিনি যদি আপত্তি করেন, তার সামনে নাই গেলাম।” মহেন্দ্র নিশ্চিন্ত হইল। এত সহজে এই অপ্রিয় কার্য শেষ হইবে, তাহা সে মনে করে নাই । বিহারীকে মহেন্দ্র ভয় করে । সেই দিনই বিহারী মহেন্দ্রের অন্তঃপুরে গিয়া কহিল, “বিনোদ-বোঠান, মাপ করিতে হইবে।” ஆ বিনোদিনী । কেন, বিহারীবাৰু। বিহারী। মহেন্দ্রের কাছে শুনিলাম, আমি অস্তঃপুরে আপনার সামনে বাহির হই বলিয়া আপনি বিরক্ত হইয়াছেন । তাই ক্ষমা চাহিয়া বিদায় হইব । وبا 8 مسدوسيا