পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ রবীন্দ্র-রচনাবলী ললিত যৌবনখানি, বসন্ত-বাতাসে চঞ্চল বাসনাব্যথা সুগন্ধ নিশ্বাসে করিছ প্রকাশ ; নিষুপ্ত পূর্ণিমা রাতে নির্জন গগনে, একাকিনী ক্লান্ত হাতে বিছাইছ দুগ্ধশুভ্র বিরহ-শয়ন ; শরৎ-প্রত্যুষে উঠি করিছ চয়ন শেফালি, গাঁথিতে মালা, ভুলে গিয়ে শেষে, তরুতলে ফেলে দিয়ে, আলুলিত কেশে গভীর অরণ্যছায়ে উদাসিনী হয়ে বসে থাক ; ঝিকিমিকি আলোছায়া লয়ে কম্পিত অঙ্গুলি দিয়ে বিকালবেলায় বসন বয়ন কর বকুলতলায় ; অবসন্ন দিবালোকে কোথা হতে ধীরে ঘনপল্লবিত কুঞ্জে সরোবর-তীরে করুণ কপোতকণ্ঠে গাও মুলতান ; কখন অজ্ঞাতে আসি ছুঁয়ে যাও প্রাণ সকৌতুকে ; করি দাও হৃদয় বিকল, অঞ্চল ধরিতে গেলে পালাও চঞ্চল কলকণ্ঠে হাসি’, অসীম আকাঙ্ক্ষণ রাশি জাগাইয়া প্রাণে, ক্রতপদে উপহাসি’ মিলাইয়া যাও নভোনীলিমার মাঝে । কখনো মগন হয়ে আছি যবে কাজে স্থলিতবসন তব শুভ্র রূপখানি নগ্ন বিদ্যুতের আলো নয়নেতে হানি চকিতে চমকি চলে যায়। জানালায় একেলা বসিয়ে যবে আঁধার সন্ধ্যায়,— মুখে হাত দিয়ে, মাতৃহীন বালকের মতো বহুক্ষণ র্কাদি স্নেহ-আলোকের তরে ; ইচ্ছা করি, নিশার সাধারস্রোতে মুছে ফেলে দিয়ে যায় স্বষ্টিপট হতে