পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চোখের বালি 8&oe মছিন কী লিখিয়াছে শীঘ্র আমাকে শুনাইয়া দাও।” বলিতে বলিতে তিনি আগ্রহে ৰিছানায় উঠিয়া বসিলেন । । আশা তখন ঘরে আসিয়া ধীরে ধীরে সমস্ত চিঠি পড়িয়া শুনাইল । রাজলক্ষ্মী জিজ্ঞাসা করিলেন, “শরীরের কথা মহিন কী লিথিয়াছে, ওইখানটা আর একবার পড়ো তো ।” আশা পুনরায় পড়িল, “কিছুদিন হইতেই আমি তেমন ভালো বোধ করিতেছিলাম না, তাই আমি—” o রাজলক্ষ্মী । থাক থাকৃ, আর পড়িতে হইবে না। ভালো বোধ হইবে কী করিয়া । বুড়ো মা মরেও না, অথচ কেবল ব্যামো লইয়া তাহাকে জালায় । কেন তুমি মহিনকে আমার অমুখের কথা খবর দিতে গেলে । বাড়িতে ছিল, ঘরের কোণে বসিয়া পড়াশুনা করিতেছিল, কাহারও কোনো এলাকায় ছিল না— মাঝে হইতে মার ব্যামোর কথা পাড়িয়া তাহাকে ঘরছাড়া করিয়া তোমার কী মুখ হুইল । আমি এখানে মরিয়া থাকিলে তাহাতে কাহার কী ক্ষতি হইত। এত দুঃখেও তোমার ঘটে এইটুকু বুদ্ধি আসিল না । বলিয়া বিছানার উপর শুইয়া পড়িলেন । বাহিরে মসমস্ শব্দ শুনা গেল । বেহর কহিল, “ভাক্তারবাবু আয় ।” ডাক্তার কাসিয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিল। আশা তাড়াতাড়ি ঘোমটা টানিয়া খাটের অন্তরালে গিয়া দাড়াইল । ডাক্তার জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার কী হইয়াছে বলুন তো ।” রাজলক্ষ্মী ক্রোধের স্বরে কহিলেন, “হইবে আর কী । মানুষকে কি মরিতে দিবে না । তোমার ওষুধ খাইলেই কি অমর হইয়া থাকিব ।” ডাক্তার সাম্বনার স্বরে কহিল, “অমর করিতে না পারি, কষ্ট যাহাতে কমে সে চেষ্টা—* রাজলক্ষ্মী বলিয়া উঠিলেন, “কষ্টের ভালো চিকিৎসা ছিল যখন বিধবারা পুড়িয়া মরিত— এখন এ তো কেবল বাধিয়া মারা । যাও ডাক্তারবাবু, তুমি যাও— আমাকে আর বিরক্ত করিয়ো না, আমি একলা থাকিতে চাই ।” ডাক্তার ভয়ে ভয়ে কহিল, "আপনার নাড়িটা একবার—* রাজলক্ষ্মী অত্যন্ত বিরক্তির স্বরে কহিলেন, “আমি বলিতেছি, তুমি যাও । আমার নাড়ি বেশ আছে— এ নাড়ি শীঘ্ৰ ছাড়িবে এমন ভরসা নাই ।” । ডাক্তার অগত্যা ঘরের বাহিরে গিয়া অাশাকে ডাকিয়া পাঠাইল । আশাকে و والمسلمونيلا