পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૭ r r রবীন্দ্র-রচনাবলী ইন্দুমতী । (স্বগত) নিশ্চয় ললিতবাবু হবে । নাম শুনেই মনে হচ্ছে র্তার নাম বটে। to ক্ষান্তমণি। কী রকম বলে দেখি । সুন্দর-হানো ? পাতলা ? ইন্দুমতী । ইক্ষান্তমণি । চোখে চশমা আছে ? ইন্দুমতী । ই ই, চশমা আছে– আর সকল কথাতেই মুচকে মুচকে হাসে– দেখে গা জলে যায় । ক্ষান্তমণি । তবে আমাদের ললিত চাটুজ্জে তার আর সন্দেহ নেই । ইন্দুমতী । ললিত চাটুজ্জে ! ক্ষান্তমণি । জান না ? ঐ কলুটোলার মৃত্যকালী চাটুজ্জের ছেলে । ছোকরাটি কিন্তু মন্দ না ভাই। এম. এ. পাশ করে জলপানি পাচ্ছে । ইন্দুমতী । ওদের ঘরে স্ত্রীপুত্রপরিবার কেউ নেই নাকি ! অমনতরো লক্ষ্মীছাড়ার মতো যেখানে সেখানে টো টো করে ঘুরে বেড়ায় কেন। ক্ষান্তমণি। স্ত্রীপুত্র থেকেই বা কী হয়। ওর তো তবু নেই। ললিত আবার বাপকে বলেছে রোজগার না করে সে বিয়ে করবে না । সে-কথা যাক । এখন আমাকে একটা পরামর্শ দে না ভাই । ইন্দুমতী । আচ্ছা, এক কাজ করা যাক । মনে করে। আমি চন্দ্রবাবু ; আপিস থেকে ফিরে এসেছি, থিদেয় প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে— তার পরে তুমি কী করবে বলে। দেখি । রসো ভাই, চন্দ্রবাবুর ঐ চাপকান আর শামলাটা পরে নিই, নইলে আমাকে চন্দ্রবাবু মনে হবে না । [ আপিসের বেশ পরিধান ও ক্ষান্তমণির উচ্চহাস্য ( গম্ভীর ভাবে ) ক্ষান্তমণি, স্বামীর প্রতি এরূপ পরিহাস অত্যন্ত গৰ্হিত কার্য । কোনো পতিব্ৰতা রমণী স্বামীর সমক্ষে কদাপি উচ্চহাস্ত করেন না। যদি দৈবাৎ কোনো কারণে হাস্ত অনিবার্য হইয়া উঠে তবে সাধবী স্ত্রী প্রথমে স্বামীর অনুমতি লইয়া পরে বদনে অঞ্চল দিয়া ঈষৎ হাসিতে পারেন । ষা হোক আমি আপিস থেকে ফিরে এসেছি— এখন তোমার কী কর্তব্য বলো । ক্ষান্তমণি। প্রথমে তোমার চাপকানটি এবং শামলাটি খুলে দিই, তার পরে জলখাবার— * ইন্দুমতী । নাং, তোমার কিছু শিক্ষা হয়নি। আমি তোমাকে সেদিন এত করে দেখিয়ে দিলুম কিছু মনে নেই ? ক্ষান্তমণি । সে ভাই, আমি ভালো পারিনে ।