পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ઇરપ્ન. রবীন্দ্র-রচনাবলী কাটিয়া ফেলিয়া আপেল-গাছ রোপণ করিলে তবেই আমরা আশাতুরূপ ফললাভ করিব । এই কথা নিশ্চয় জানিতে হইবে, আপেল-গাছে যে বেশি ফল ফলিতেছে তাহার কারণ তাহার গোড়ায়, তাহার মাটিতে সার অাছে— আমাদের আমবাগানের खभिव्र नांब्र दहकांण रुहेल निःालविङ झ्झेब्रा ८१८छ् । श्रांप्नल शाहे ना, झेशहे আমাদের মূল দুর্ভাগ্য নহে ; মাটিতে সার নাই, ইহাই আক্ষেপের বিষয়। সেই সার যদি যথেষ্ট পরিমাণে থাকিত তবে আপেল ফলিত না, কিন্তু আম প্রচুর পরিমাণে ফলিত এবং তখন সেই আস্ত্রের সফলতায় আপেলের অভাব লইয়া বিলাপ করিবার কথা আমাদের মনেই হইত না । তখন দেশের আম বেচিয়া অনায়াসে বিদেশের আপেল হাটে কিনিতে পারিতাম, ভিক্ষার ঝুলি সম্বল করিয়া একরাত্রে পরের প্রসাদে বড়োলোক হইবার চুরাশা মনের মধ্যে বহন করিতে হইত না । আসল কথা, দেশের মাটিতে সার ফেলিতে হইবে । সেই সার আর কিছুই নহে— ‘কিল বিছুীরতাং সারমেকং, বীরতাকেই একমাত্র সার বলিয়া জানিবে। ঋষির বলিয়াছেন, ‘নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ”— এই ষে আত্মা, ইনি বলহীনের দ্বারা লভ্য নহেন । বিশ্বাত্মা-পরমাত্মার কথা ছাড়িয়া দেওয়া যাক – যে-ব্যক্তি দুর্বল সে নিজের আত্মাকে পায় না, নিজের আত্মাকে যে-ব্যক্তি সম্পূর্ণ উপলব্ধি না করিয়াছে সে অপর কিছুকেই লাভ করিতে পারে না । যুরোপ নিজের আত্মাকে যে-পথ দিয়া লাভ করিতেছে সে-পথ আমাদের সম্মুখে নাই ; কিন্তু যে-মূল্য দিয়া লাভ করিতেছে তাহ আমাদের পক্ষেও অত্যাবশ্বক— তাহা বল, তাহা বীর্য । য়ুরোপ যে-কর্মের দ্বারা যে-অবস্থার মধ্যে আত্মাকে উপলব্ধি করিতেছে আমরা সেকর্মের দ্বারা সে-অবস্থার মধ্যে আত্মাকে উপলব্ধি করিব না— আমাদের সম্মুখে অন্য পথ, আমাদের চতুর্দিকে অন্যরূপ পরিবেষ, আমাদের অতীতের ইতিহাস অন্তরূপ, আমাদের শক্তির মূলসঞ্চয় অন্যত্র— কিন্তু আমাদের সেই বীর্ষ আবখ্যক যাহা থাকিলে পথকে ব্যবহার করিতে পারিব, পরিবেষকে অমুকুল করিতে পারিব, অতীতের ইতিহাসকে বর্তমানে সফল করিতে পারিব এবং শক্তির গৃঢ় সঞ্চয়কে আবিষ্কৃত-উদঘাটিত করিয়া তাহার অধিকারী হইতে পারিব। ‘নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ”— আত্মা তো আছেই, কিন্তু বল নাই বলিয়া তাহাকে লাভ করিতে পারি না। ত্যাগ করিতে শক্তি নাই, দুঃখ পাইতে সাহস নাই, লক্ষ্য অনুসরণ করিতে নিষ্ঠা নাই ; রুশ সংকল্পের দৌর্বল্য, ক্ষীণ শক্তির আত্মবঞ্চনা, স্থখবিলাসের ভীরুতা, লোকলজ্জা, লোকভয় আমাদিগকে মুহুর্তে মুহূর্তে যথার্থভাবে আত্মপরিচয় আত্মলাভ আত্মপ্রতিষ্ঠা হইতে দূরে রাখিতেছে । সেইজন্যই ভিক্ষুকের মতো আমরা অপরের মাহায্যের প্রতি ঈর্ষ।