পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী আপনি শিখালে৷ তারে । ছেলেটির সাথে বৃদ্ধ সেই বীরগুরু সন্ধ্যায় প্রভাতে খেলিত ছেলের মতো । ভক্তগণ দেখি গুরুরে কহিল আসি, ‘একি প্রভু, একি ! আমাদের শঙ্কা লাগে । ব্যাভ্রশাবকেরে যত যত্ন কর, তার স্বভাব কি ফেরে ? যখন সে বড়ো হবে তখন নখর . গুরুদেব, মনে রেখো হবে যে প্রখর ।” গুরু কহে, তাই চাই, বাঘের বাচ্ছারে বাঘ না করিচু যদি কী শিখাতু তারে ? বালক যুবক হল গোবিন্দের হাতে দেখিতে দেখিতে । ছায়া-হেন ফিরে সাথে, পুত্র-হেন করে তার সেবা । ভালোবাসে প্রাণের মতন— সদা জেগে থাকে পাশে ডান হস্ত যেন । যুদ্ধে হয়ে গেছে গত শিখগুরু গোবিন্দের পুত্র ছিল যত— আজি তার প্রৌঢ়কালে পাঠানতনয় জুড়িয়া বসিল আসি শূন্ত সে হৃদয় গুরুজীর । বাজে-পোড়া বটের কোটরে বাহির হইতে বীজ পড়ি বায়ুভরে বৃক্ষ হয়ে বেড়ে বেড়ে কবে ওঠে ঠেলি, বৃদ্ধ বটে ঢেকে ফেলে ডালপালা মেলি । একদা পাঠান কহে নমি গুরু-পায়, ‘শিক্ষা মোর শেষ হল চরণকৃপায়, এখন আদেশ পেলে নিজ ভূজবলে উপার্জন করি গিয়া রাজসৈন্যদলে |’ গোবিন্দ কহিলা তার পিঠে হাত রাখি, ‘আছে তব পৌরুষের এক শিক্ষা বাকি ?