পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ8ե রবীন্দ্র-রচনাবলী চন্দ্র। ( ঘড়ি দেখিয়া ) না, এখনও সময় হয় নি। অবলাকাস্তবাবু, আমার ভাগ্নী নির্মলা আজ আমাদের সভার সভ্য হয়েছেন । শৈলবালা । ( নিৰ্মলার নিকট বসিয়া ) দেখুন, পুরুষের স্বার্থপর, মেয়েদের কেবল নিজেদের সেবার জন্যেই বিশেষ করে বদ্ধ করে রাখতে চায় । চন্দ্রবাবু যে আপনাকে আমাদের সভার হিতের জন্যে দান করেছেন তাতে র্তার মহত্ত্ব প্রকাশ পায় । নির্মলা । আমার মামার কাছে দেশের কাজ এবং নিজের কাজ একই। আমি যদি আপনাদের সভার কোনো উপকার করতে পারি তাতে র্তারই সেবা হবে। শৈলবালা। আপনি যে সৌভাগ্যক্রমে চন্দ্রবাবুকে ভালো করে জানবার যোগ্যতা লাভ করেছেন এতে আপনি ধন্য । নির্মলা । আমি ওঁকে জানব না তো কে জানবে। শৈলবালা । আত্মীয় সব সময় আত্মীয়কে জানে না। আত্মীয়তায় ছোটোকে বড়ো করে তোলে বটে, তেমনি বড়োকেও ছোটো করে আনে। চন্দ্রবাবুকে যে আপনি যথার্থভাবে জেনেছেন তাতে আপনার ক্ষমতা প্রকাশ পায় । নির্মলা। কিন্তু, আমার মামাকে যথার্থভাবে জানা খুব সহজ, ওঁর মধ্যে এমন একটি স্বচ্ছতা আছে ! শৈলবালা। দেখুন, সেইজন্যেই তো ওঁকে ঠিকমতো জানা শক্ত। দুর্যোধন স্ফটিকের দেয়ালকে দেয়াল বলে দেখতেই পান নি। সরল স্বচ্ছতার মহত্ত্ব কি সকলে বুঝতে পারে। তাকে অবহেলা করে। আড়ম্বরেই লোকের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। নির্মলা। আপনি ঠিক কথা বলেছেন । বাইরের লোকে আমার মামাকে কেউ চেনেই না। বাইরের লোকের মধ্যে এত দিন পরে আপনার কাছে মামার কথা শুনে আমার যে কী আনন্দ হচ্ছে সে কী বলব । শৈলবালা । আপনার ভক্তিও আমাকে ঠিক সেইরকম আনন্দ দিচ্ছে । চন্দ্র। (উভয়ের নিকটে আসিয়া) অবলাকাস্তবাবু, তোমাকে যে বইটি দিয়েছিলেম সেটা পড়েছ ? শৈলবালা । পড়েছি এবং তার থেকে সমস্ত নোট করে আপনার ব্যবহারের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছি । 战 চন্দ্র। আমার ভারী উপকার হবে, আমি বড়ো খুশি হলুম অবলাকাস্তবাবু। পূর্ণ নিজে আমার কাছে ওই বইটি চেয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, ওঁর শরীর ভালো ছিল না বলে কিছুই করে উঠতে পারেন নি। খাতাটি তোমার কাছে আছে ? শৈলবালা । এনে দিচ্ছি । [ প্রস্থান