পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ९९ (t হাতেই থাক, উভয় পক্ষের বক্তৃতা শেষ হয়ে গেলে বিচারে যার প্রাপ্য হয় তাকেই দেবেন । 嘔 শৈলবালা । ( রুমালখানি পকেটে পুরিয়া ) আমাকে আপনি নিরপেক্ষ লোক মনে করছেন বুঝি ? এই কোণে যেমন একটি ন’ অক্ষর লাল স্বতোয় সেলাই করা আছে আমার হৃদয়ের একটি কোণে খুজলে দেখতে পাবেন ওই অক্ষরটি রক্তের বর্ণে লেখা । এ রুমাল আমি আপনাদের কাউকেই দেব না । । শ্ৰীশ। রসিকবাবু, এ কী রকম জবৰ্দস্তি। আর, ন’ অক্ষরটিও তো বড়ো ভয়ানক অক্ষর । রসিক। শুনেছি বিলিতি শাস্ত্রে ন্যায়ধর্মও অন্ধ, ভালোবাসাও অন্ধ । এখন দুই অন্ধে লড়াই হোক, যার বল বেশি তারই জিত হবে। শৈলবালা। শ্ৰীশবাবু, যার রুমাল আপনি তো তাকে দেখেন নি, তবে কেন কেবলমাত্র কল্পনার উপর নির্ভর করে ঝগড়া করছেন । । শ্ৰীশ । দেখি নি কে বললে । শৈলবালা । দেখেছেন ? কাকে দেখলেন । ন’ তো দুটি আছে— ঐশ। দুটিই দেখেছি— তা এ রুমাল দুজনের ধারই হোক, দাবি আমি পরিত্যাগ করতে পারব না । রসিক শ্ৰীশবাবু, বৃদ্ধের পরামর্শ শুল্পন, হৃদয়গগনে দুই চন্দ্রের আয়োজন করবেন না : একশ্চন্দ্রস্তমোহন্তি ভূত্যের প্রবেশ ভূত্য । ( শ্ৰীশের প্রতি ) চন্দ্রবাবুর চিঠি নিয়ে একটি লোক আপনার বাড়ি খুজে শেষকালে এখানে এসেছে । குறி শ্ৰীশ । (চিঠি পড়িয়া ) একটু অপেক্ষা করবেন ? চন্দ্রবাবুর বাড়ি কাছেই— আমি একবার চট করে দেখা করে আসব। শৈলবালা । পালাবেন না তো ? * শ্ৰীশ । না, আমার রুমাল বন্ধক রইল, ওখানা খালাস না করে যাচ্ছি নে । [ প্রস্থান রসিক। ভাই শৈল, কুমারসভার সভাগুলিকে যেরকম ভয়ংকর কুমার ঠাউরেছিলুম তার কিছুই নয়। এদের তপস্যা ভঙ্গ করতে মেনকা রম্ভ মদন বসন্ত কারও দরকার হয় না, এই বুড়ো রসিকই পারে। শৈলবালা । তাই তো দেখছি ।