পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রৰীক্স-রচনাবলী هذة দালিয়া ভূমিকা পরাজিত শ সুজা ঔরস্ত্রীবের ভয়ে পলায়ন করিয়া আরাকান-রাজের আতিথ্য গ্রহণ করেন। সঙ্গে তিন সুন্দরী কন্যা ছিল । আরাকান-রাজের ইচ্ছা হয়, রাজপুত্রদের সহিত তাহাদের বিবাহ দেন। সেই প্রস্তাবে শী সুজা নিতান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করাতে, একদিন রাজার আদেশে তাহাকে ছলক্রমে নৌকাযোগে নদীমধ্যে লইয়া নৌকা ডুবাইয়া দিবার চেষ্টা করা হয়। সেই বিপদের সময় কনিষ্ঠা বালিকা আমিনাকে পিতা স্বয়ং নদীমধ্যে নিক্ষেপ করেন। জ্যেষ্ঠা কন্যা আত্মহত্যা করিয়া মরে । এবং সুজার একটি বিশ্বাসী কর্মচারী রহমত আলি জুলিখাকে লইয়া সাতার দিয়া পালায়, এবং সুজা যুদ্ধ করিতে করিতে মরেন । আমিনা খরস্রোতে প্রবাহিত হইয়া দৈবক্রমে অনতিবিলম্বে এক ধীবরের জালে উদ্ভূত হয় এবং তাহারই গৃহে পালিত হইয়া বড়ো হইয় উঠে। ইতিমধ্যে বৃদ্ধ রাজার মৃত্যু হইয়াছে এবং যুবরাজ রাজ্যে অভিষিক্ত হইয়াছেন। প্রথম পরিচ্ছেদ একদিন সকালে বৃদ্ধ ধীবর আসিয়া আমিনাকে ভৎসনা করিয়া কহিল, তিন্নি। ধীবর আরাকান ভাষায় আমিনার নূতন নামকরণ করিয়াছিল— তিন্নি, আজ সকালে তোর হইল কী। কাজকর্মে যে একেবারে হাত লাগাস নাই। আমার নতুন জালে আঠা দেওয়া হয় নাই, আমার নৌকো—’ আমিনা ধীবরের কাছে আসিয়া আদর করিয়া কহিল, ‘বুঢ়া, আজ আমার দিদি আসিয়াছেন, তাই আজ ছুটি । ‘তোর আবার দিদি কে রে তিন্নি । জুলিখা কোথা হইতে বাহির হইয়া আসিয়া কহিল, ‘আমি ’ । বৃদ্ধ অবাক হইয়া গেল। তার পর জুলিখার অনেক কাছে আসিয়া ভালো করিয়া তাহার মুখ নিরীক্ষণ করিয়া দেখিল। খপ করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, ‘তুই কাজ-কাম কিছু জানিস ? আমিনা কহিল বুঢ়া, দিদির হইয়া আমি কাজ করিয়া দিব। দিদি কাজ করিতে পারিবে না ।”