পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१७ - রবীন্দ্র-রচনাবলী কমলমুখী। তিনি কোনোকালেই আপনাকে অপরাধী করেননি, সে জন্যে আপনি ভাববেন না— বিনোদবিহারী। তবে এত মিনতি করছি তিনি আমাকে দেখা দিচ্ছেন না কেন ? কমলমুখী । আপনি সত্যই যে তার দেখা চান এ জানতে পারলে তিনি এক মুহূর্ত গোপন থাকতেন না। তবে নিতান্ত যদি সেই পোড়ারমুখ দেখতে চান তো দেখুন। [ মুখ উদঘাটন বিনোদবিহারী। আপনি ! তুমি ! কমল ! আমাকে মাপ করলে ! ইন্দুমতীর প্রবেশ ইন্দুমতী। মাপ করিসনে দিদি । আগে উপযুক্ত শাস্তি হোক তার পরে মাপ । বিনোদবিহারী । তা হলে অপরাধীকে আর-একবার বাসরঘরে আপনার হাতে সমপণ করতে হয় । ইন্দুমতী। দেখেছিস ভাই, কতবড়ো নির্লজ্জ । এরি মধ্যে মুখে কথা ফুটেছে। ওদের একটু আদর দিয়েছিস কি আর ওদের সামলে রাখবার জো নেই । মেয়েমানুষের হাতে পড়েই ওদের উপযুক্তমতো শাসন হয় না। যদি ওদের নিজের জাতের সঙ্গে ঘরকন্না করতে হত তা হলে দেখতুম ওদের এত আদর থাকত কোথায় । বিনোদবিহারী । তা হলে ভূভারহরণের জন্য মাঝে মাঝে অবতারের আবশ্যক হত না ; পরস্পরকে কেটেকুটে সংসারটা অনেকটা সংক্ষেপ করে আনতে পারতুম । কমলমুখী । ঐ ক্ষাস্তদিদি আসছেন । ( বিনোদের প্রতি ) তোমার সাক্ষাতে উনি বেরোবেন না । [ বিনোদবিহারীর প্রস্থান ক্ষান্তমণির প্রবেশ ক্ষান্তমণি । তা বেশ হয়েছে ভাই, বেশ হয়েছে। এই বুঝি তোর নতুন বাড়ি । এ যে রাজার ঐশ্বর্য । তা বেশ হয়েছে । এখন তোর স্বামী ধরা দিলেই আর কোনো খেদ থাকে না । ইন্দুমতী । সে বুঝি আর বাকি আছে ! স্বামিরত্বটিকে ভাড়ারে পুরেছেন। ক্ষান্তমণি । আহা, তা বেশ হয়েছে, বেশ হয়েছে । কমলের মতো এমন লক্ষ্মী মেয়ে কি কখনো অস্থখী হতে পারে। । ইন্দুমতী । ক্ষাস্তদিদি, তুমি যে এই ভরসন্ধের সময় ঘরকল্প ফেলে এখানে ছুটে এসেছ ? ক্ষান্তমণি । আর ভাই ঘরকন্না। আমি দু-দিন বাপের বাড়ি গিয়েছিলুম, এই ওঁর