পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వలీ4 রবীন্দ্র-রচনাবলী সলজ্জ নৃপবালার প্রবেশ রসিক। কী নৃপ, হারাধন খুজে বেড়াচ্ছিস ? নৃপবালা। না, আমার কিছু হারায় নি। রসিক । সে তো অতি সুখের সংবাদ ৷ শৈলদিদি, তা হলে আর কেন, রুমালখানার মালিক যখন পাওয়া যাচ্ছে না তখন যে লোক কুড়িয়ে পেয়েছে তাকেই ফিরিয়ে দিস । (শৈলর হাত হইতে রুমাল লইয়া ) এ জিনিসটা কার ভাই । নৃপবালা । ও আমার নয় । [ পলায়নোস্থ্যত রসিক । (নৃপকে ধরিয়া) যে জিনিসটা খোওয়া গেছে নৃপ তার উপরে কোনো দাবিও রাখতে চায় না । নৃপবালা। রসিকদাদা, ছাড়ো, আমার কাজ আছে । দ্বিতীয় দৃশ্য গোলদিঘির পথ শ্ৰীশ ও বিপিন শ্ৰীশ । ওহে বিপিন, আজ মাঘের শেষে প্রথম বসন্তের বাতাস দিয়েছে, জ্যোৎস্নাও দিব্যি, আজ যদি এখনই ঘুমোতে কিম্বা পড়া মুখস্থ করতে যাওয়া যায় তা হলে দেবতারা ধিক্কার দেবেন। বিপিন। তাদের ধিক্কার খুব সহজে সহ হয়, কিন্তু ব্যামোর ধাক্কা কিম্বা— শ্ৰীশ । দেখো, ওইজন্যে তোমার সঙ্গে আমার ঝগড়া হয় । আমি বেশ জানি দক্ষিনে হাওয়ায় তোমারও প্রাণটা চঞ্চল হয়, কিন্তু পাছে কেউ তোমাকে কবিত্বের অপবাদ দেয় ব’লে মলয়-সমীরণটাকে একেবারেই আমল দিতে চাও না । এতে তোমার বাহাদুরিটা কী জিজ্ঞাসা করি । আমি তোমার কাছে আজ মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করছি, আমার ফুল ভালো লাগে, জ্যোৎস্না ভালো লাগে— বিপিন । এবং— শ্ৰীশ । এবং যা-কিছু ভালো লাগবার মতো জিনিস সবই ভালো লাগে । বিপিন। বিধাতা তো তোমাকে ভারী আশ্চর্ষ রকম ছাচে গড়েছেন দেখছি । শ্ৰীশ । তোমার ছাচ আরও আশ্চর্য । তোমার লাগে ভালো, কিন্তু বল অন্যরকম— আমার সেই শোবার ঘরের ঘড়িটার মতো— সে চলে ঠিক, বাজে ভুল ।