পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

4 ον রবীন্দ্র-রচনাবলী লাঙ্গুল দর্শন করিলে ব্রাহ্মণকে ভূমিদান ও কুণ্ডপতনক-নামক চাতুর্মাহু ব্ৰত-পালন আবশ্বক ; কিন্তু ব্যাটারি ও বাষ্প বিষয়ে কোনো বর্ণনা বা বিধান পাওয়া গেল না। আমরা ক্রমশ ইহার বিস্তারিত সমালোচনা করিয়া ইতিহাসহীনতা সম্বন্ধে ভারতের দুর্নাম দূর করিব ; প্রাচীন গ্রন্থ হইতেই স্পষ্ট প্রমাণ করিয়া দিব যে, পুরাকালে গ্যালভানিক ব্যাটারি ভারতখণ্ডে ছিল না এবং সংস্কৃত ভাষায় অক্সিজেন বাম্পের কোনো নাম পাওয়া যায় না | २ মধুসূদন শাস্ত্রীমহাশয় কর্তৃক উক্ত প্রবন্ধের প্রতিবাদ আমাদের ভারত-ইতিহাস-সমুদ্রের পাতিহাস, বঙ্গসাহিত্যকুঞ্জের গুঞ্জেন্মিত্ত কুঞ্জবিহারীবাবু কলম ধরিয়াছেন ; অতএব প্রাচীন ভারত, সাবধান ! কোথায় খোচ লাগে কী জানি। অপোগণ্ডের যদি কাগুজ্ঞান থাকিবে তবে নিজের সুধাভাণ্ডে দণ্ডপ্রহার করিতে প্রবৃত্তি হইবে কেন ! অথবা বহুদৰ্শী প্রাচীন ভারতকে সাবধান করা বাহুল্য, উষ্ঠতলেখনী কুঞ্জবিহারীকে দেখিয়া তিনি পবিত্র উত্তরীয়ে সর্বাঙ্গ আবৃত করিয়া বসিয়া আছেন। তাই আমাদের এই আমড়াতলার দামড়াবাছুরটি প্রাচীন ভারতে গ্যালভানিক ব্যাটারি এবং অক্সিজেনের সংস্কৃত নাম খুজিয়া পাইলেন না। ধন্য র্তাহার স্বদেশহিতৈষিত । আমাদের দেশে যে এক কালে গ্যালভ্যানিক ব্যাটারি এবং অক্সিজেন বাষ্প আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ভাই বাঙালি, এ কথা তুমি বিশ্বাস করিবে কেন ? তাহা হইলে তোমার এমন দশা হইবে কেন ? আজ যে তুমি লাঞ্ছিত, গঞ্জিত, তিরস্কৃত, পরপদানত, অন্নবস্ত্রহীন, দাসাচুদাস ভিক্ষুক, জগতে তোমার এমন অবস্থা হয় কেন ? কোন দিন তুমি এবং তোমাদের সাহিত্য-সংসারের এই সার সংটি বলিয়া বসিবেন, অসভ্য ভারতের বাতাসে অক্সিজেন বাষ্পই ছিল না এবং বিদ্যুৎ খেলাইতে পারে ভারতের অশিক্ষিত আকাশ এমন এনলাইটেও ছিল না। ভাই বাঙালি, তুমি এনলাইটেও, বাতাসের সঙ্গে তুমি অনেক অক্সিজেন বাষ্প টানিয়া থাক এবং তোমার চোখে মুখে বিদ্যুৎ খেলে। আমি মূখ, আমি কুসংস্কারাচ্ছন্ন, তাই, ভাই, আমি বিশ্বাস করি প্রাচীন ভারতে গ্যালভানিক ব্যাটারি ছিল এবং অক্সিজেন বাম্পের অস্তিত্বও অবিদিত ছিল না। কেন বিশ্বাস করি ? অাগে নিষ্ঠার সহিত কুৰ্ম কল্কি ও স্বন্দ পুরাণ পাঠ করে, গো এবং ব্রাহ্মণের প্রতি ভক্তি স্থাপন করে, মেচ্ছের অন্ন যদি খাইতে ইচ্ছা হয় তো গোপনে খাইয়া সমাজে অস্বীকার করে,