পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দতত্ত্ব SWが○ পরন্তু সম্বন্ধ ও বহুবচনের মধ্যে নৈকট্য আছে। একের সহিত সম্বন্ধীয়গণই বছ। বাংলায় রামের শব্দ সম্বন্ধসূচক, রামের বহুবচনসূচক ; রামেরা বলিতে রামের গণ, অর্থাং রাম-সম্বন্ধীয়গণ বুঝায়। নরা গজ প্রভৃতি শব্দে প্রাচীন বাংলায় বহুবচনে আকার প্রয়োগ দেখা যায়, রামের শব্দকে সেইরূপ আকারযোগে বহুবচন করিয়া লওয়া হইয়াছে এইরূপ আমাদের বিশ্বাস । নেপালি ভাষায় ইহার পোষক প্রমাণ পাওয়া যায়। আমরা যে স্থলে দেবের বলি তাহারা দেবহেরু বলে। হে এবং রু উভয় শব্দই সম্বন্ধবাচক এবং সম্বন্ধের বিভক্তি দিয়াই বহুবচনৰূপ নিম্পন্ন হইয়াছে । আসামি ভাষায় ইহতর শব্দের অর্থ ইহাদের, তঁহতর তোমাদের । ইহঁত-কের ইহাদিগের, তহত-কের তোমাদিগের, কানে বিসদৃশ বলিয়া ঠেকে না । কর্মকারকেও আসামি ইহঁতক বাংলা ইহাদিগের সহিত সাদৃশ্ববান । এই ইত শক রাজপুত হংদেশদ্ধের ন্যায় ভবন্ত বা সন্ত শাহুসারী, তাহ মনে করিবার একট। কারণ আছে। আসামিতে হঁওতা শব্দের অর্থ হওয়া । এ স্থলে এ কথাও স্মরণ রাখা যাইতে পারে যে, পশ্চিমি হিন্দির মধ্যে রাজপুত ভাষাতেই সাধারণ প্রচলিত সম্বন্ধকারক বাংলার অনুরূপ ; ঘোড়ার শব্দের মাড়োয়ারি ও মেৱারি ঘোড়ারো, বহুবচনে ঘোড়ারো । পাঞ্জাবি ভাষায় ষষ্ঠী বিভক্তি চিহ্ন দা, স্ত্রীলিঙ্গে দী। ঘোড়াদা— ঘোড়ার, যন্ত্রদীবাণী— যন্ত্রের বাণী । প্রাচীন পাঞ্জাবিতে ছিল ডা। আমাদের দিগের শব্দের দ-কে এই পাঞ্জাবি দ-এর সহিত এক করিয়া দেখা যাইতে পারে। ঘোড়াদা-কের— ঘোড়াদিগের । বীম সাহেবের মতে পাঞ্জাবি এই দ। শব্দ সংস্কৃত তন শব্দের অপভ্রংশ। তন শব্দের যোগে সংস্কৃত পুরাতন সনাতন প্রভৃতি শব্দের স্বষ্টি । প্রাকৃতেও ষষ্ঠীবিভক্তির পরে কের এবং তণ উভয়ের ব্যবহার অাছে ; হেমচন্দ্রে আছে, সম্বন্ধিন; কেরতণে। মেৱারি তণে। তণু এবং বহুবচনে তণ ব্যবহার হইয়া থাকে। তণ"-র উত্তর কের শবদ যোগ করিলে ‘তণকের’ রূপে দিগের শব্দের মিল পাওয়া যায়। প্রাচীনকাব্যে অধিকাংশ স্থলে সব শব্দ যোগ করিয়া বহুবচন নিম্পন্ন হইত। এখনও বাংলায় সব শব্দের যোগ চলিত আছে। কাব্যে তাহার দৃষ্টান্ত । 萨 পাখিসব করে রব রাতি পোহাইল । কিন্তু কথিত ভাষায় উক্তপ্রকার কাব্যপ্রয়োগের সহিত নিয়মের প্রভেদ দেখা যায়। কাব্যে আমাসব, তোমাসব, পাখিসব প্রভৃতি কথায় দেখা যাইতেছে সব শবই