পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী سارا ماریا সম্বন্ধে কার সংস্কৃত কৃত এবং তাহার প্রাকৃত অপভ্রংশ কের শব্দ হইতে বাংলাভাষায় সম্বন্ধে র বিভক্তির স্বষ্টি হইয়াছে, পূর্বে আমরা তাহার বিস্তারিত আলোচনা করিয়াছি। প্রাচীন বৈষ্ণব পদাবলীতে— তাহার যাহার অর্থে তাকর যাকর শব্দের প্রয়োগ দৃষ্টান্তস্বরূপে দেখানো হইয়াছে। এ সম্বন্ধে বর্তমানে অপ্রচলিত পুরাতন দৃষ্টাস্তের বিশেষ প্রয়োজন নাই। কারণ এখনও সম্বন্ধে বাংলায় কার শব্দপ্রয়োগ ব্যবহৃত হয় ; যথা, এখনকার তখনকার ইত্যাদি। কিন্তু এই কার শব্দের প্রয়োগ কেবল স্থলবিশেষেই বদ্ধ। কৃত শব্দের অপভ্রংশ কণর কেনই বা কোনো কোনো স্থলে অবিকৃত রহিয়াছে এবং কেনই বা অন্যত্র কেবলমাত্র তাহার র অক্ষর অবশিষ্ট রহিয়াছে, তাহ নির্ণয় করা সুকঠিন। ভাষা ইচ্ছাশক্তিবিশিষ্ট জীবের মতো কেন যে কী করে, তাহার সম্পূর্ণ কিনারা করা যায় না। উচ্চারণের বিশেষ নিয়মঘটিত কারণে অনেক সময়ে বিভক্তির পরিবর্তন হইয়৷ থাকে ; যথা, অধিকরণে মাটির বেলায় আমরা বলি মাটিতে, ঘোড়ার বেলায় বলি ঘোড়ায়। কিন্তু এ স্থলে সে কথা খাটে না। লিখন শব্দের বেলায় আমরা সম্বন্ধে বলি– লিখনের, কিন্তু এখন শব্দের বেলায় এখনের বলি না, বলি— এখনকার । অথচ লিখন এবং এখন শব্দে উচ্চারণনিয়মের কোনো প্রভেদ হইবার কথা নাই । বাংলায় কোন কোন স্থলে সম্বন্ধে কার শব্দের প্রয়োগ হয় তাহার একটি তালিকা প্রকাশিত হইল । এখনকার তখনকার যখনকার কখনকার । এখানকার সেখানকার যেখানকার কোনখানকার । এ-বেলাকার ও-বেলাকার সে-বেলাকার । এ-সময়কার ও-সময়কার সে-সময়কার । সে-বছরকার ও-বছরকার এ-বছরকার । যে-দিনকণর সে-দিনকার ও-দিনকার এ-দিনকার । এ-দিককার ও-দিককার সে-দিককার,– দক্ষিণ দিককার, উত্তর দিককার, সম্মুখ দিককার, পশ্চাৎ দিককার । অাজকেকার কালকেকার পরশুকার ।