পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છ88 রবীন্দ্র-রচনাবলী অপভ্রংশে পরবর্তী ই অথবা উ লোপ হইলেও উক্ত নিয়ম বলবান থাকে ; যেমন হইল শব্দের অপভ্রংশে হ’ল, হউন শব্দের অপভ্রংশে হন । কিন্তু, হয়েন শব্দের অপভ্রংশ বিশুদ্ধ ‘হন’ উচ্চারণ হয় ] । থলিয়া শব্দের অপভ্রংশে থলে, টকুয়া শবের অপভ্রংশে ট'কে ( অস্ত্র ) । ক্ষ-র পূর্বেও অ ও হইয়া যায় ; যেমন, কক্ষ পক্ষ লক্ষ । ক্ষ-শব্দের উচ্চারণ বোধ করি এককালে ইকার-ঘেঁষা ছিল, তাই এই অক্ষরের নাম হইয়াছে ক্ষিয় । এখনও পূর্ববঙ্গের লোকের ক্ষ-র সঙ্গে যফলা যোগ করেন ; এবং তাহদের দেশের যফলা উচ্চারণের প্রচলিত প্রথানুসারে পূর্ববর্তী বর্ণে ঐকার যোগ করিয়া দেন ; যেমন, র্তাহারা লক্ষটাকা-কে বলেন– লৈক্ষ্য টাকা । যাহা হউক, মোটের উপর এই নিয়মটিকে পাকা নিয়ম বলিয়। ধরা যাইতে পারে। যে দুই-একটা ব্যতিক্রম আছে, পূর্বে অন্যত্র তাহ প্রকাশিত হওয়াতে এ স্থলে তাহার উল্লেখ করিলাম না । দেখা যাইতেছে ও-স্বরবর্ণের প্রতি বাংলা উচ্চারণের কিছু বিশেষ ঝোক আছে । প্রথমত, আমরা সংস্কৃত অ-র বিশুদ্ধ উচ্চারণ রক্ষা করি নাই । আমাদের অ, সংস্কৃত অ এবং ও-র মধ্যবর্তী। তাহার পরে আবার সামান্য ছুতা পাইলেই আমাদের অ সম্পূর্ণ ও হইয়া দাড়ায়। কতকগুলি স্বরবর্ণ আছে যাহাকে সন্ধিস্বর বলা যাইতে পারে ; যেমন, অ এবং উ-র মধ্যপথে– ও, অ এবং ই-র সেতুস্বরূপ— এ ; যখন এক পক্ষে ই অথবা এ এবং অপর পক্ষে অা, তখন অ্য। তাহীদের মধ্যে বিরোধভঞ্জন করে। বোধ হয় ভালো করিয়া সন্ধান করিলে দেখা যাইবে, বাঙালির উচ্চারণ কালে এই সহজ সন্ধিস্বরগুলির প্রতিই বিশেষ মমত্ব প্রকাশ করিয়া থাকে । శి ఏ సె