পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোড়ায় গলদ 8(t নিমাই। খেয়েই কালেজে গেলে আমার অস্থখ করে তাই একটুখানি বেড়িয়ে নিয়ে— শিবচরণ। বাগবাজারে তুমি হাওয়া খেতে এস ? শহরের আর কোথাও বিশুদ্ধ বায়ু নেই ! এ তোমার দার্জিলিং সিমলে পাহাড় ! বাগবাজারের হাওয়া থেয়ে খেয়ে আজকাল যে চেহারা বেরিয়েছে একবার আয়নাতে দেখা হয় কি। আমি বলি ছোড়াটা একজামিনের তাড়াতেই শুকিয়ে যাচ্ছে— তোমাকে যে ভূতে তাড়া করে বাগবাজারে ঘোরাচ্ছে তা তো জানতুম না ! নিমাই । আজকাল বেশি পড়তে হয় বলে রোজ খানিকট করে একসেসাইজ করে নিই— শিবচরণ। রাস্তার ধারে কাঠের পুতুলের মতো স্থা করে দাড়িয়ে থেকে তোমার একসেসাইজ হয়, বাড়িতে তোমার দাড়াবার জায়গা নেই ! নিমাই। অনেকটা চলে এসে শ্রান্ত হয়েছিলুম তাই একটু বিশ্রাম করা যাচ্ছিল । শিবচরণ। শ্রাস্ত হয়েছিস, তবে ওঠ আমার পালকিতে । যা এখনি কালেজ ষা। গেরস্তর বাড়ির সামনে দাড়িয়ে শ্রান্তি দূর করতে হবে না ! নিমাই । সে কী কথা ! আপনি কী করে যাবেন ? শিবচরণ। আমি যেমন করে হোক যাব, তুই এখন পালকিতে ওঠ । ওঠ বলছি । নিমাই । অনেকটা জিরিয়ে নিয়েছি— এখন আমি অনায়াসে হেঁটে যেতে পারব। শিবচরণ। না, সে হবে না— তুই ওঠ, আমি দেখে যাই— নিমাই । আপনার যে ভারি কষ্ট হবে । শিবচরণ। সে জন্যে তোকে কিছু ভাবতে হবে না— তুই ওঠ, পালকিতে । নিমাই । কী করি—পালকিতে ওঠা যাক, আজ সকালবেলাটা মাটি হল । 曝 [ পালকি-আরোহণ শিবচরণ । ( বেহারার প্রতি ) দেখ একেবারে সেই পটলডাঙার কালেজে নিয়ে যাবি কোথাও থামাবিনে । [ পালকি লইয়া বেহারাগণ প্রস্থানোন্মুখ নিমাই । ( জনাস্তিকে বেহারাদের প্রতি ) মির্জাপুর চন্দ্রবাবুর বাসায় চল, তোদের এক টাকা বকশিশ দেব, ছুটে চল । [ প্রস্থান শিবচরণ। আজ আর রুগি দেখা হল না। আমার সকালবেলাটা মাটি করে দিলে । [ প্রস্থান