পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

«es ब्रदौट-ब्रछन्नांवलौ এখন যে-দল একটু পৃথক হয় তাহাকে ত্যাগ করিতে হয় । কারণ, ইংরেজের আইন কোনটা হিন্দু কোনটা অহিন্দু তাহা স্থির করিবার ভার লইয়াছে— রফ করিবার ভার ইংরেজের হাতে নাই, সমাজের হাতেও নাই। তাহার কারণ, পৃথক হওয়ার দরুন কাহারও কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি নাই—ইংরেজরচিত স্বতন্ত্র আইনের আশ্রয়ে কাহারও কিছুতে বিশেষ ব্যাঘাত ঘটে না । অতএব, এখন হিন্দুসমাজ কেবলমাত্র ত্যাগ করিতেই পারে । শুদ্ধমাত্র ত্যাগ করিবার শক্তি বলরক্ষা-প্রাণরক্ষার উপায় নহে । আক্কেল দাত যখন ঠেলিয়া উঠিতে থাকে তখন বেদনায় অস্থির করে। কিন্তু যখন সে উঠিয়া পড়ে তখন শরীর তাহাকে স্বস্থভাবে রক্ষা করে। যদি দাত উঠিবার কষ্টের কথা স্মরণ করিয়া দাতগুলাকে বিসর্জন দেওয়াই শরীর সাব্যস্ত করে তবে বুঝিব, তাহার অবস্থা ভালো নহে—বুঝিব, তাহার শক্তিহীনতা ঘটিয়াছে। সেইরূপ সমাজের মধ্যে কোনো প্রকার নূতন অভু্যদয়কে স্বকীয় করিয়া লইবার শক্তি একেবারেই না থাকা, তাহাকে বর্জন করিতে নিরুপায়ভাবে বাধ্য হওয়া সমাজের সজীবতার লক্ষণ নহে ; এবং এই বর্জন করিবার জন্য ইংরেজের আইনের সহায়তা লওয়া সামাজিক আত্মহত্যার উপায় । যেখানেই সমাজ আপনাকে খণ্ডিত করিয়া গগুটিকে আপনার বাহিরে ফেলিতেছে সেখানে যে কেবল নিজেকে ছোটো করিতেছে তাহা নহে—ঘরের পাশেই চিরস্থায়ী বিরোধ স্থষ্টি করিতেছে । কালে কালে ক্রমে ক্রমে এই বিরোধী পক্ষ যতই বাড়িয়া উঠিতে থাকিবে, হিন্দুসমাজ ততই সপ্তরর্থীর বেষ্টনের মধ্যে পড়িবে। কেবলই খোয়াইতে থাকিব, এই যদি আমাদের অবস্থা হয় তবে নিশ্চয় দুশ্চিন্তার কারণ ঘটিয়াছে। পূর্বে আমাদের এ-দশা ছিল না । আমরা খোওয়াই নাই, আমরা ব্যবস্থাবদ্ধ করিয়া সমস্ত রক্ষা করিয়াছি—ইহাই আমাদের বিশেষত্ব, ইহাই আমাদের বল । শুধু এই নয়, কোনো কোনো সামাজিক প্রথাকে অনিষ্টকর জ্ঞান করিয়া আমরা ইংরেজের আইনকে ঘাটাইয়া তুলিয়াছি, তাহাও কাহারও অগোচর নাই । যেদিন কোনো পরিবারে সস্তানদিগকে চালনা করিবার জন্য পুলিসম্যান ডাকিতে হয়, সেদিন আর পরিবাররক্ষার চেষ্টা কেন । সেদিন বনবাসই শ্রেয় । মুসলমান সমাজ আমাদের এক পাড়াতেই আছে এবং খ্ৰীস্টানসমাজ আমাদের সমাজের ভিতের উপর বস্তার মতো ধাক্কা দিতেছে। প্রাচীন শাস্ত্রকারদের সময়ে এ-সমস্যাট ছিল না। যদি থাকিত তবে তাহারা হিন্দুসমাজের সহিত এই-সকল