পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉>br রবীন্দ্র-রচনাবলী চলার পথের আগে আগে ঋতুর ঋতুর সোহাগ জাগে, চরণঘণয়ে মরণ মরে পলে পলে | কোটাল। কোনো সহজ মানুষকে তে কথা বলতে বলতে গান গাইতে শুনি নি । আবার ধরা পড়ে গেছি রে, আমরা সহজ মানুষ না । কোটাল। তোমাদের কোনো কাজকর্ম নেই বুঝি ? না। আমাদের ছুটি । কোটাল । কেন বলে তো । চন্দ্রহাস । পাছে সময় নষ্ট হয়। কোটাল। এটা তো বোঝা গেল না। ওই দেখে— তা হলে আবার গান ধরতে হল । কোটাল। না তার দরকার নেই। আর বেশি বোঝবার আশা রাখি নে । সবাই আমাদের বোঝবার আশা ছেড়ে দিয়েছে। কোটাল। এমন হলে তোমাদের চলবে কী করে । চন্দ্ৰহাস । আর তো কিছুই চলবার দরকার নেই— শুধু আমরাই চলি । কোটাল । ( মাঝির প্রতি ) পাগল রে । উন্মাদ পাগল ! চন্দ্রহাস । এই যে এতক্ষণ পরে দাদা আসছে। কী দাদা, পিছিয়ে পড়েছিলে কেন । চন্দ্রহাস । ওরে আমরা চলি উনপঞ্চাশ বায়ুর মতো, আমাদের ভিতরে পদার্থ কিছুই নেই ; আর দাদা চলে শ্রাবণের মেঘ— মাঝে মাঝে থমকে দাড়িয়ে ভারমোচন করতে হয়। পথের মধ্যে ওকে শ্লোকরচনায় পেয়েছিল । দাদা। চন্দ্রহাস, দৈবাৎ তোমার মুখে এই উপমাটি উপাদেয় হয়েছে। ওর মধ্যে একটু সার কথা আছে। আমি ওটি চৌপদীতে গেঁথে নিচ্ছি। চন্দ্রহাস । না, না, এখন থাক্ দাদ। আমরা কাজে বেরিয়েছি । তোমার চৌপদীর চার পা, কিন্তু চলবার বেলা এতবড়ে খোড়া জন্তু জগতে দেখতে পাওয়া যায় না। দাদ। আপনি কে । মাঝি। আমি ঘাটের মাঝি । দাদা। আর আপনি ?