পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ২৭৩ স্ত্রীকে যে শ্লোক রচনা করিয়া শোনান তাহাতে উষ্ট্রশব্দ হইতে রফলাটা লোপ করিয়াছিলেন– শব্দপ্রয়োগ সম্বন্ধে এরূপ দুর্ঘটনা বর্তমান লেখকের দ্বারাও অনেক ঘটিয়াছে— অতএব, সমস্ত গভীরভাবে পর্যালোচনা করিয়া অাশা হইতেছে, কালিদাসের যেরূপ পরিণাম হইয়াছিল, আমার পক্ষেও তাহ অসম্ভব নহে। ইতি শ্ৰীহঃ এ গল্প যদি ছাপানো হয়, আমি বাপের বাড়ি চলিয়া যাইব । শ্ৰীমতী নিঃ আমিও তৎক্ষণাৎ শ্বশুরবাড়ি যাত্রা করিব । শ্ৰীহঃ धुस्लुित्र S७०३ মাল্যদান সকালবেলায় শীত-শীত ছিল। দুপুরবেলায় বাতাসটি অল্প-একটু তাতিয়া উঠিয়৷ দক্ষিণ দিক হইতে বহিতে আরম্ভ করিয়াছে । যতীন যে বারান্দায় বসিয়া ছিল সেখান হইতে বাগানের এক কোণে এক দিকে একটি কাঠাল ও আর-এক দিকে একটি শিরীষগাছের মাঝখানের ফঁাক দিয়া বাহিরের মাঠ চোখে পড়ে। সেই শূন্ত মাঠ ফাঙ্কনের রৌত্রে ধুধু করিতেছিল। তাহারই এক প্রাস্ত দিয়া কঁচা পথ চলিয়া গেছে— সেই পথ বাহিয়া বোঝাই-খালাস গোরুর গাড়ি মন্দগমনে গ্রামের দিকে ফিরিয়া চলিয়াছে, গাড়োয়ান মাথায় গামছা ফেলিয়া অত্যন্ত বেকারভাবে গান গাহিতেছে । এমন সময় পশ্চাতে একটি সহাস্য নারীকণ্ঠ বলিয়া উঠিল, “কী যতীন, পূর্বজন্মের কারো কথা ভাবিতেছ বুঝি।” যতীন কহিল, "কেন পটল, আমি এমনিই কি হতভাগা যে, ভাবিতে হইলেই পূর্বজন্ম লইয়া টান পাড়িতে হয়।” আত্মীয়সমাজে ‘পটল’ নামে খ্যাত এই মেয়েটি বলিয়া উঠিল, “আর মিথ্যা বড়াই করিতে হইবে না । তোমার ইহজন্মের সব খবরই তো রাখি, মশায়। ছি ছি, এত বয়স হইল, তবু একটা সামান্ত বউও ঘরে আনিতে পারিলে না। আমাদের ওই-ষে ধন৷ মালীটা, ওরও একটা বউ আছে– তার সঙ্গে দুইবেল ঝগড়া করিয়া সে পাড়াহুদ্ধ