পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ ○o Q ভাদুড়ি। কিন্তু, নেলি যে সতীশকে ভালোবাসে সে তো দেখে মনে হয় না। ও তো সতীশকে নাকের জলে চোখের জলে করে। আমি আরো মনে করতাম, নন্দীর উপরেই ওর বেশি টান । জায়া । তোমার মেয়েটির ওই স্বভাব সে যাকে ভালোবাসে তাকেই জালাতন করে। দেখো না বিড়ালছানাটাকে নিয়ে কী কাগুটাই করে । কিন্তু আশ্চর্য এই, তবু তো ওকে কেউ ছাড়তে চায় না । নলিনীর প্রবেশ নলিনী। মা, একবার সতীশবাবুর বাড়ি যাবে না ? তার মা বোধ হয় খুব কাতর হয়ে পড়েছেন। বাবা, আমি একবার তার কাছে যেতে চাই । একাদশ পরিচ্ছেদ সতীশ । মা, এখানে আমি যে কত সুখে আছি সে তো আমার কাপড়-চোপড় দেখেই বুঝতে পার। কিন্তু মেসোমশায় যতক্ষণ না আমাকে পোষ্যপুত্র গ্রহণ করেন ততক্ষণ নিশ্চিন্ত হতে পারছি নে। তুমি যে মাসহরা পাও আমার তো তাতে কোনো সাহায্য হবে না। অনেকদিন হতে নেব-নেব করেও আমাকে পোষ্যপুত্র নিচ্ছেন না— বোধ হয় ওঁদের মনে মনে সন্তানলাভের অাশা এখনো আছে । বিধু। (হতাশভাবে ) সে আশা সফল হয়-বা, সতীশ । সতীশ । আঁ্যা ! বলে কী মা ! বিধু। লক্ষণ দেখে তো তাই বোধ হয়। সতীশ । লক্ষণ অমন অনেক সময় ভুলও তো হয়। বিধু। না, ভুল নয় সতীশ, এবার তোর ভাই হবে। সতীশ । কী যে বল মা, তার ঠিক নেই– ভাই হবেই কে বললে! বোন হতে পারে না বুঝি ! বিধু। দিদির চেহারা যেরকম হয়ে গেছে নিশ্চয় তার মেয়ে হবে না, ছেলেই হবে। তা ছাড়া ছেলেই হোক, মেয়েই হোক, আমাদের পক্ষে সমানই । সতীশ । এত বয়সের প্রথম ছেলে, ইতিমধ্যে অনেক বিঘ্ন ঘটতে পারে। বিধু। সতীশ, তুই চাকরির চেষ্টা কর। সতীশ । অসম্ভব। পাস করতে পারি নি। তা ছাড়া চাকরি করবার অভ্যাস