পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV8 রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্ত্রী। ভাবছি সব-রকম চেষ্টাই ব্যর্থ হল, এখন কোনো উপায় তো আর বাকি নেই। ধনপতি। ভাবনা কী। যখন তোমাদের কোনো উপায় খাটল না তখন মহাকাল নিজের উপায় নিজেই বের করবেন । র্তার চলবার গরজ তারই, আমাদের নয় ; তার ডাক পড়লেই যেখান থেকে হোক তার বাহন ছুটে আসবে। আজ যাদের দেখাই যাচ্ছে না, কাল তারা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে। তার আগে আমার খাতাপত্র সামলাই গে। এসে হে কোষাধ্যক্ষ, আজ সিন্ধুকগুলো একটু শক্ত করে বন্ধ করতে হবে। * [ ধনপতি ও তার দলের প্রস্থান চরের প্রবেশ চর। মন্ত্রীমশায়, আমাদের শূদ্রপাড়ায় ভারি গোল বেধে গেছে। মন্ত্রী । কেন কী হয়েছে। চর। দলে দলে আসছে সব ছুটে । তারা বলে, বাবার রথ আমরা চালাব। সকলে । বলে কী। রশি ছুতেই দেব না। চর। কিন্তু তাদের ঠেকাবে কে। সৈন্যদল । আমরা আছি । চর। তোমরা কজনই বা আছ। তাদের মারতে মারতে তোমাদের তলোয়ার ক্ষয়ে যাবে— তবু এত বাকি থাকবে যে রথতলায় তোমাদের আর জায়গাই হবে না। চর। মন্ত্রীমশায়, তুমি যে একেবারে বসে পড়লে ? মন্ত্রী। ওরা দল বেঁধে আসছে বলে আমি ভয় করি নে। চর। তবে ? মন্ত্রী। আমার মনে ভয় হচ্ছে ওরা পারবে । সৈনিক দল। বল কী, মন্ত্ৰী-মহারাজ, ওরা পারবে মহাকালের রথ টানতে! শিলা জলে ভাসবে ! মন্ত্রী। দৈবাৎ যদি পারে তা হলে বিধাতার নূতন বিধি শুরু হবে। নীচের তলাটা হঠাৎ উপরের তলা হয়ে ওঠাকেই বলে প্রলয়। ভূমিকম্পে মাটির মধ্যে সেই চেষ্টাতেই তো বিভীষিকা। যা বরাবর প্রচ্ছন্ন আছে তাই প্রকাশ হবার সময়টাই যুগান্তরের সময় ।