পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8cmb" রবীন্দ্র-রচনাবলী চিত্তের কাছাকাছি। ষে উৎস থেকে তোমার বাণী উৎসারিত সেই উৎসধারাতেই এখানকার দুই কবিজীবনের পুষ্পকানন অভিষিক্ত। ষে সাদির দেহ এখানকার একটি পবিত্র ভূখণ্ডতলে বহু শতাব্দীকাল চিরবিশ্রামে শয়ান তার আত্মা আজ এই মুহূর্তে এই কাননের আকাশে উর্ধ্বে উখিত, এবং এখনি কবি হাফেজের পরিতৃপ্ত হাস্য র্তার স্বদেশবাসীর আনন্দের মধ্যে পরিব্যাপ্ত । _. আমি বললেম, যথোচিতভাবে আপনাদের সৌজন্যের প্রতিযোগিতা করি এমন সম্ভাবনা নেই। কারণ, আপনারা যে ভাষায় আমাকে সম্ভাষণ করলেন সে আপনাদের নিজের, আমার এই ভাষা ধার করা। জমার খাতায় আমার তরফে একটিমাত্র অঙ্ক উঠল, সে হচ্ছে এই যে, আমি সশরঙ্গ এখানে উপস্থিত। বঙ্গাধিপতি একদা কবি হাফেজকে বাংলায় নিমন্ত্রণ করেছিলেন, তিনি যেতে পারেন নি। বাংলার কবি পারস্তাধিপের নিমন্ত্রণ পেলে, সে নিমন্ত্রণ রক্ষাও করলে এবং পারস্যকে তার প্রীতি ও শুভকামনা প্রত্যক্ষ জানিয়ে কৃতার্থ হল । সভার পালা শেষ হলে পর চললেম গবর্নরের প্রাসাদে । পথে যে শিরাজের পরিচয় হল সে নূতন শিরাজ। রাস্তা ঘরবাড়ি -তৈরি চলছে। পারস্তের শহরে শহরে এই নূতন রচনার কাজ সর্বত্রই জেগে উঠল, নূতন যুগের অভ্যর্থনায় সমস্ত দেশ উৎসাহিত । সৈনিকপঙক্তির মধ্য দিয়ে বৃহৎ প্রাঙ্গণ পার হয়ে গবর্নরের প্রাসাদে প্রবেশ করলেম । মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন সেখানে অপেক্ষা করছে । কিন্তু অন্ত সকল অনুষ্ঠানের পূর্বেই যাতে বিঙাম করতে পারি সেই প্রার্থনামতই ব্যবস্থা হল। পরিষ্কার হয়ে নিয়ে আশ্রয় নিলুম শোবার ঘরে। তখন বেলা চারটে । রাত্রে মিমন্ত্রিতবর্গের সঙ্গে আহার করে দীর্ঘদিনের অবসান । 韩 সকালে গবর্নর বললেন, কাছে এক ভঞ্জলোকের বাগানবাড়ি আছে, সেটা আমাদের বাসের জন্ত প্রস্তুত। সেখানেই আমার বিশ্রামের সুবিধা হবে বলে বাসা-বঙ্গল স্থির ठ्ञ । * ১৭ এপ্রেল। আজ অপরাহ্লে সাদির সমাধিপ্রাঙ্গণে আমার অভ্যর্থনার সভা । গবর্নর প্রথমে নিয়ে গেলেন চেম্বার অফ কমার্সে। সেখানে সদস্যদের সঙ্গে বসে চা খেয়ে গেলেম সাদির সমাধিস্থানে। পথের দুই ধারে জনতা। কালো কালো আঙরাখায় মেয়েদের সর্বাঙ্গ ঢাকা, মুখেরও অনেকখানি, কিন্তু বুরখ নয়। সাধারণত পুরুষদের কাপড় যুরোপীয়, কচিৎ দেখা গেল পাগড়ি ও লম্বা কাপড়। বর্তমান রাজার