পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী \లS Q নন্দিনী । ষে-বালক এই ফুলের মঞ্জরি রঞ্জনকে এনে দিয়েছিল। রাজা । সে-যে অদ্ভুত ছেলে। বালিকার মতো তার কচি মুখ, কিন্তু উদ্ধত তার বাক্য । সে স্পর্ধা করে আমাকে আক্রমণ করতে এসেছিল । নন্দিনী । তার পরে ? কী হল তার ৷ বলে কী হল। বলতেই হবে, চুপ করে থেকে না । রাজা । বুদবুদের মতো সে লুপ্ত হয়ে গেছে । নন্দিনী । রাজা, এইবার সময় হল । রাজা । কিসের সময় । t নন্দিনী । আমার সমস্ত শক্তি নিয়ে তোমার সঙ্গে আমার লড়াই । রাজা । আমার সঙ্গে লড়াই করবে তুমি ! তোমাকে-যে এই মুহূর্তেই মেরে ফেলতে পারি । নন্দিনী । তার পর থেকে মুহূর্তে মুহূর্তে আমার সেই মরা তোমাকে মারবে । আমার অস্ত্র নেই, আমার অস্ত্র মৃত্যু। রাজা । তা-হলে কাছে এসো। সাহস আছে আমাকে বিশ্বাস করতে ? চলে৷ আমার সঙ্গে । আজ আমাকে তোমার সাথী করো, নন্দিন । নন্দিনী । কোথায় যাব ? রাজা । আমার বিরুদ্ধে লড়াই করতে, কিন্তু আমারি হাতে হাত রেখে । বুঝতে পারছ না ? সেই লড়াই শুরু হয়েছে। এই আমার ধ্বজা, আমি ভেঙে ফেলি ওর দও, তুমি ছিড়ে ফেলে ওর কেতন । আমারি হাতের মধ্যে তোমার হাত এসে আমাকে মারুক, মারুক, সম্পূর্ণ মারুক তাতেই আমার মুক্তি । দলের লোক । মহারাজ, এ কী কাণ্ড । এ কী উন্মত্ততা । ধ্বজ ভাঙলেন । আমাদের দেবতার ধ্বজ, যার অজেয় শল্যের এক দিক পৃথিবীকে অন্য দিক স্বৰ্গকে বিদ্ধ করেছে, সেই আমাদের মহাপবিত্র ধ্বজদণ্ড ! পুজার দিনে কী মহাপাতক। চল, সর্দারদের খবর দিইগে । [ প্রস্থান রাজা। এখনো অনেক ভাঙা বাকি, তুমিও তো আমার সঙ্গে যাবে নন্দিনী, প্রলয়পথে আমার দীপশিখা ? নন্দিনী । যাব আমি । ফাগুলালের প্রবেশ ফাগুলাল। বিশুকে ওরা কিছুতেই ছেড়ে দেবে না। এ কে । এই বুঝি রাজা ? ডাকিনী, ওর সঙ্গে পরামর্শ চলছে ! বিশ্বাসঘাতিনী !