পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশেষ २११ বোরোবুন্ডুর সেদিন প্রভাতে সূর্য এইমতে উঠেছে অম্বরে অরণ্যের বন্দনমর্মরে ; নীলিম বাম্পের সম্পর্শ লভি’ শৈলশ্রেণী দেখা দেয় যেন ধরণীর স্বপ্লচ্ছবি । নারিকেল-বনপ্রান্তে নরপতি বসিল একাকী ধ্যানমগ্ন-আঁখি । উচ্চে উচ্ছ্বসিল প্রাণ অস্তহীন আকাজক্ষাতে, কী সাহসে চাহিল পাঠাতে আপন পুজার মন্ত্র যুগযুগান্তরে। অপরূপ অমৃত অক্ষরে লিখিল বিচিত্র লেখা ; সাধকের ভক্তির পিপাসা রচিল আপন মহাভাষা— সর্বকাল সর্বজন আনন্দে পড়িতে পারে যে-ভাষার লিপির লিখন । সে-লিপি ধরিল দ্বীপ আপন বক্ষের মাঝখানে, সে লিপি তুলিল গিরি আকাশের পানে সে-লিপির বাণী সনাতন করেছে গ্রহণ প্রথম-উদিত সূর্য শতাব্দীর প্রত্যহ প্রভাতে । অদূরে নদীর কিনারাতে আলবাধা মাঠে কত যুগ ধরে চাষী ধান বোনে আর ধান কাটে ;– আঁধারে আলোয় প্রত্যহের প্রাণলীলা সাদায় কালোয় ছায়ানাট্যে ক্ষণিকের নৃত্যচ্ছবি যায় লিখে লিখে, লুপ্ত হয় নিমিখে নিমিখে।