পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রক্তকরবী Ꮼ© ☾ নেপথ্যে। কেবল একখানা হাত দিয়ে ধরতে চাই বলেই সবাই আমার কাছ থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু সব দিয়ে যদি তোমাকে ধরতে চাই, ধর দেবে কি, নন্দিন । নন্দিনী । তুমি তো আমাকে ঘরে যেতে দিলে না, তবে কেন এসব বলছ । নেপথ্যে । আমার অনবকাশের উজান ঠেলে তোমাকে ঘরে আনতে চাই নে। যেদিন পালের হাওয়ায় তুমি অনায়াসে আসবে সেই দিন আগমনীর লগ্ন লাগবে। সে-হাওয়া যদি ঝড়ের হাওয়া হয় সেও ভালো । এখনো সময় হয় নি । নন্দিনী। আমি তোমাকে বলছি রাজা, সেই পালের হাওয়া আনবে রঞ্জন । সে যেখানে যায় ছুটি সঙ্গে নিয়ে আসে। নেপথ্যে । তোমার রঞ্জন যে-ছুটি বয়ে নিয়ে বেড়ায় সেই ছুটিকে রক্তকরবীর মধু দিয়ে ভরে রাখে কে, আমি কি জানি নে। নন্দিন, তুমি তো আমাকে ফাক ছুটির খবর দিলে, মধু কোথায় পাব। নন্দিনী । আজ আমি তবে যাই । নেপথ্যে। না, এই কথাটার জবাব দিয়ে যাও । নন্দিনী । ছুটি কী ক'রে মধুতে ভরে, তার জবাব রঞ্জনকে চোখে দেখলেই পাবে। সে বড়ো সুন্দর। নেপথ্যে । সুন্দরের জবাব সুন্দরই পায় । অসুন্দর যখন জবাব ছিনিয়ে নিতে চায়, বীণার তার বাজে না, ছিড়ে যায়। আর নয়, যাও তুমি চলে যাও– নইলে বিপদ ঘটবে। নন্দিনী। যাচ্ছি, কিন্তু বলে গেলুম, আজ আমার রঞ্জন আসবে, আসবে, আসবে,— কিছুতে তাকে ঠেকাতে পারবে না। [ প্রস্থান ফাগুলাল খোদাইকর ও তার স্ত্রী চন্দ্রার প্রবেশ ফাগুলাল। আমার মদ কোথায় লুকিয়েছ চন্দ্রা, বের করো। চন্দ্রা। ওকি কথা । সকাল থেকেই মদ ? ফাগুলাল। আজ ছুটির দিন। কাল ওদের মারণচণ্ডীর ব্রত গেছে । আজ ধ্বজাপুজা, সেই সঙ্গে অস্ত্রপুজা । চন্দ্রা। বল-কি। ওরা কি ঠাকুরদেবতা মানে ।