পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় QS)) রবীন্দ্রভবনে রক্ষিত পাণ্ডুলিপি হইতে অনেক কবিতার রচনাস্থান নির্দিষ্ট হইয়াছে, এবং তারিখ ও পাঠ সংশোধিত বা পরিবর্তিত হইয়াছে। ‘বিচিত্রা’ কবিতাটির একটি অপ্রকাশিত স্বতন্ত্র পাঠ নিম্নে মুদ্রিত হইল : বিচিত্র। চুরি করে নিয়ে গেলে মোর মন কোন শিশুকালে, হে বিচিত্র, বাধি মায়াজালে— বস্তুর আড়ালে যেথা দিনরাত্রি সাজাইছ তুমি তোমার রঙের রঙ্গভূমি । আকাশে ছড়ায়ে কেশ বঁশি বাজায়েছ চুপে চুপে,— সেই স্বরে মোর চক্ষে কত স্বপ্ন অপরূপ রূপে করেছে বিচিত্র লীলা ধরণীর ধূলির সীমায়, দিগন্তের দূর নীলিমায়। নারিকেলপল্লবের আকম্পিত ইঙ্গিতমর্মরে বৈশাখের খরস্থর্যকরে আকাশ নিশ্বসি উঠি মধ্যাহ্নের আতন্দ্র আলসে ভরিয়াছে রহস্যের রসে । তৃণাগ্রে শিশিরবিন্দু শরতের শুভ্রতার বাণী বাতাস ঝলকি দিত, মুক্তির আনন্দ দিত আনি, কঁাপিত প্রভাত আলো বালকের পুলকিত বুকে হে বিচিত্রা, চাহি তব মুখে । চৈত্রে স্বচ্ছ পূর্ণিমায় যত্নে-গাথা মল্লিকার মালা ভরে যবে রাত্রির নিরালা মিলন-আশ্বাসগন্ধ, শ্রান্তিহীন পাপিয়ার গানে, অনিদ্রা নিবিড় করি আনে,— যৌবনের সেই রাত্রে, বিচিত্রা, কাহার কালো চোখে সোহিনীর মিড়খানি মিলাইতে চাদের আলোকে, মধুর সংশয়ে-ছোওয়া শরমের কুহেলিকা আনি হাসির উপরে দিতে টানি ।