পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাট্যপরিচয় এই নাটকটি সত্যমূলক। এর ঘটনাটি কোথাও ঘটেছে কিনা ঐতিহাসিকের পরে তার প্রমাণসংগ্রহের ভার দিলে পাঠকদের বৃঞ্চিত হতে হবে। এইটুকু বললেই যথেষ্ট যে কবির জ্ঞানবিশ্বাস-মতে এটি সম্পূর্ণ সত্য । ঘটনাস্থানটির প্রকৃত নামটি কী সে-সম্বন্ধে ভৌগোলিকদের মতভেদ থাকা সম্ভব। কিন্তু সকলেই জানেন এর ডাকনাম যক্ষপুরী। পণ্ডিতরা বলেন, পৌরাণিক যক্ষপুরীতে ধনদেবতা কুবেরের স্বর্ণসিংহাসন। কিন্তু এনাটকটি একেবারেই পৌরাণিক কালের নয়, একে রূপকও বলা যায় না। যে-জায়গাটার কথা হচ্ছে সেখানে মাটির নীচে যক্ষের ধন পোত অাছে। তাই সন্ধান পেয়ে পাতালে সুড়ঙ্গ-খোদাই চলছে, এইজন্যেই লোকে আদর ক’রে একে যক্ষপুরী নাম দিয়েছে। এই নাটকে এখানকার সুড়ঙ্গখোদাইকরদের সঙ্গে যথাকালে আমাদের পরিচয় হবে। যক্ষপুরীর রাজার প্রকৃত নাম সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতের ঐক্য কেউ প্রত্যাশ করে না। এইটুকু জানি যে, এর একটি ডাকনাম আছে— মকররাজ । যথাসময়ে লোকমুখে এই নামকরণের কারণ বোঝা যাবে। রাজমহলের বাহির-দেয়ালে একটি জালের জানলা আছে। সেই জালের আড়াল থেকে মকররাজ র্তার ইচ্ছামতো পরিমাণে মানুষের সঙ্গে দেখাশোনা করে থাকেন। কেন তার এমনতরো অদ্ভুত ব্যবহার তা নিয়ে নাটকের পাত্ৰগণ যেটুকু আলাপ আলোচনা করেছেন তার বেশি আমরা কিছু জানি নে । এই রাজ্যের র্যারা সর্দার তারা যোগ্য লোক এবং যাকে বলে বহুদশী । রাজার তারা অন্তরঙ্গ পার্ষদ। র্তাদের সতর্ক ব্যবস্থাগুণে খোদাইকরদের কাজের মধ্যে ফাক পড়তে পায় না এবং যক্ষপুরীর নিরস্তর উন্নতি হতে থাকে। এখানকার মোড়লরা একসময়ে খোদাইকর ছিল, নিজগুণে