পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O8V রবীন্দ্র-রচনাবলী নন্দিনী । কিন্তু এখানকার জানোয়াররা তোকে শাস্তি দেয়, আমার-যে বুক ফেটে যায় । কিশোর। সেই ব্যথায় আমার ফুল আরো বেশি করে আমারই হয়ে ফোটে। ওরা হয় আমার দুঃখের ধন । নন্দিনী । কিন্তু তোদের এ দুঃখ আমি সইব কী করে। কিশোর। কিসের দুঃখ । একদিন তোর জন্যে প্রাণ দেব নন্দিনী, এই কথা কতবার মনে-মনে ভাবি ৷ নন্দিনী । তুই তো আমাকে এত দিলি, তোকে আমি কী ফিরিয়ে দেব বল তো, কিশোর । কিশোর। এই সত্যটি কর নন্দিনী, আমার হাত থেকেই রোজ সকালে ফুল নিবি । নন্দিনী । আচ্ছা, তাই সই। কিন্তু তুই একটু সামলে চলিস। কিশোর। না, আমি সামলে চলব না, চলব না। ওদের মারের মুখের উপর দিয়েই রোজ তোমাকে ফুল এনে দেব। [ প্রস্থান অধ্যাপকের প্রবেশ অধ্যাপক । নন্দিনী ! যেয়ে না, ফিরে চাও। নন্দিনী। কী অধ্যাপক । অধ্যাপক। ক্ষণে ক্ষণে আমন চমক লাগিয়ে দিয়ে চলে যাও কেন । যখন মনটাকে নাড়া দিয়েই যাও তখন না-হয় সাড়া দিয়েই বা গেলে । একটু দাড়াও, দুটো কথা বলি । i নন্দিনী । আমাকে তোমার কিসের দরকার । অধ্যাপক। দরকারের কথা যদি বললে, ওই চেয়ে দেখো । আমাদের খোদাইকরের দল পৃথিবীর বুক চিরে দরকারের-বোঝা-মাথায় কীটের মতো মুড়ঙ্গর ভিতর থেকে উপরে উঠে আসছে। এই যক্ষপুরে আমাদের ষা-কিছু ধন সব ওই ধুলোর নাড়ির ধন— সোনা। কিন্তু স্বন্দরী, তুমি যে-সোনা সে তো ধুলোর নয়, সেযে আলোর । দরকারের বাধনে তাকে কে বাধবে । 曲 নন্দিনী। বারে বারে ওই একই কথা বল। আমাকে দেখে তোমার এত বিস্ময় কিসের অধ্যাপক ।