পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉&o রবীন্দ্র-রচনাবলী বাধায় বেষ্টিত রুদ্ধ, সেদিন সংশয়সন্ধ্যাকালে কবি-হাতে বরমাল্য সে-বন্ধু পরায়েছিল ভালে ; অপেক্ষা করে নি সে তো জনতার সমর্থন তরে, দুর্দিনে জেলেছে দীপ রিক্ত তব অর্ঘ্যথালি-পরে। আজি সহস্ত্রের সাথে ঘোষিল সে, ধন্য ধন্য তুমি, ধন্য তব বন্ধুজন, ধন্য তব পুণ্য জন্মভূমি।” ১৪ অগ্রহায়ণ ১৩৩৪ শান্তিনিকেতন দেবদারু আমি তখন ছিলেম শিলঙ পাহাড়ে, রূপভাবক নন্দলাল ছিলেন কার্সিয়ঙে। তার কাছ থেকে ছোটো একটি পত্রপট পাওয়া গেল, তাতে পাহাড়ের উপর দেওদার গাছের ছবি অঁাকা । চেয়ে চেয়ে মনে হল, ওই একটি দেবদারুর মধ্যে যে-স্যামল শক্তির প্রকাশ, সমস্ত পর্বতের চেয়ে তা বড়ো, ওই দেবদারুকে দেখা গেল হিমালয়ের তপস্যার সিদ্ধিরূপে। মহাকালের চরণপাতে হিমালয়ের প্রতিদিন ক্ষয় হচ্ছে, কিন্তু দেবদারুর মধ্যে যে-প্রাণ, নব নব তরুদেহের মধ্যে দিয়ে যুগে যুগে তা এগিয়ে চলবে । শিল্পীর পত্রপটের প্রত্যুত্তরে আমি এই কাব্যলিপি পাঠিয়ে দিলেম । তপোময় হিমাদ্রির ব্রহ্মরন্ধ ভেদ করি চুপে বিপুল প্রাণের শিখা উচ্ছ্বসিল দেবদারুরূপে । সূর্যের যে-জ্যোতির্মন্ত্র তপস্বীর নিত্য-উচ্চারণ অস্তরের অন্ধকারে, পারিল না করিতে ধারণ সেই দীপ্ত রূত্রবাণী— তপস্তার স্বশিক্তিবলে সে-বাণী ধরিল শু্যামকায়া ; সবিতার সভাতলে ধরিত্রীর সামগাথা বিস্তারিল অনন্ত অম্বরে ।