পাতা:ব্যবসায়ে বাঙালী.djvu/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যবসায়ে বাঙালী ssના এই শ্রেণীর মধ্যে কেহ কেহ দোকানদারের খাতাপত্র লিখিয়া দিয়া মাসে ২১২ টাকা রোজগার করে। কেহ বা পরের মামলা-মোকদ্দমার তদ্বির করিয়া, আদালতে সত্য মিথ্য সাক্ষ্য দিয়া কখনও কিছু আয় করে। আবার ইহাদের কেহ কেহ নিম্নশ্রেণীর পল্লীতে কাহারও একখানি ঘরে বসিয়া পশুিতি করিয়া থাকে ; তাহাতে হয় তো বাহিরের ছাত্র-দত্ত বেতনে মাসে ২৩ টাকা রোজগার হয়। অনেকের হয় তো পয়সা-কড়ি জোটে না, ছাত্র-প্রদত্ত কলা, কচু, মাছ, পান, শাক লইয়াই ঘরে ফিরিতে হয়। কেহ কেহ বা গ্রাম্য সম্পত্তিশালী লোকের প্রজার নিকট খাজনার তাগেদা করিতে পেয়াদা-পাইকের কাজ করিয়া মাসে ৩৪২ টাকা বেতন পায় । এই শ্রেণীর কেহ কেহ আবার ২৩ টাকার ধান্য খরিদ করিয়া বাড়ীর মেয়েদের দ্বারা টেকিতে চাউল প্রস্তুত করায় এবং প্রতিবাসীদের নিকট তাহা বিক্রয় করিয়া হয় তো দৈনিক eye-le লাভ করিয়া তারা জীবন-যাত্রা নির্বাহ করে। অতিরিক্ত বর্ষা-হেতু বা পরিবারের অসুখ-বিমুখে চাউল প্রস্তুত করিতে অক্ষম হইলে পুজি ভাঙ্গিয়া খাইয়া ফেলে। এই নগণ্য ব্যবসায়ের মধ্যে আবার অনেক সময় প্রতিবাসীর নিকট কিছু কিছু ধার পড়িয়া যায়। অনেক সময় তাহা আদায়ই হয় না, ইহাতেও গরীবের পুজি ভাঙ্গা পড়ে। তারপর আজ কাল ব্যবসায়ীরা সস্তায় রেঙ্গুন চাউল আমদানি করায় এই কাজও ভাল চলিতেছে না । এই শ্রেণীর অনাথা বিধবা স্ত্রীলোকেরা কেহ কেহ অবস্থাপন্ন প্রতিবেশীর বাড়ীতে ঢেকিতে ধান ভানিয়া গৃহস্থকে বারো সের চাউল বুঝাইয়া দিলে মজুরী হিসাবে একসের চাউল পায়। তাহাই তাহাজের জীবিকার সম্বল। আজকাল আবার অনেক পল্লীগ্রামে ‘কুন্ড অয়েল মেসিন অর্থাৎ ধানের কল স্থাপিত হওয়ায়, অনেকের এ জীবিকার পথও নষ্ট হইয়াছে।