পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৯৯
সমসের গাজি

তিনি ক্রমেই সরিয়া পড়িতেছিলেন। যদিচ হস্তিকর দিয়া সমসের বাঙ্গালার নবাবকে চুপ রাখিয়াছিলেন কিন্তু তাঁহার অত্যাচার কাহিনী নবাবের কানে উঠিতে বিলম্ব হইল না। যুবরাজ কৃষ্ণমণি নবাবকে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে এ বিষয় জানাইবার জন্য মুর্শিদাবাদ যাত্রা করিলেন। তখন বঙ্গের সিংহাসনে ন্যায়পরায়ণ মীরকাশিম অধিষ্ঠিত। তিনি কাগজপত্র দেখিয়া কৃষ্ণমণিই যে রাজ্যের প্রকৃত উত্তরাধিকারী বুঝিতে পারিলেন এবং তাঁহাকেই ত্রিপুরাপতিরূপে ঘোষিত করিলেন। সমসেরকে ধরিবার জন্য নবাবের ফৌজ চলিয়া আসিল, সমসের তজ্জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কাযেই বন্দী হইয়া গেলেন। সমসের গাজির সৌভাগ্য রবি অস্তমিত হইয়া আসিয়াছিল। ফকিরের বাক্য অক্ষরে অক্ষরে ফলিয়াছিল—ত্রিপুরেশ্বর তাঁহার নিকট পরাজিত রহিয়া গেলেন কিন্তু নবাবের সৈন্যের নিকট তাঁহার হার হইল!

 মুর্শিদাবাদে সমসেরকে আনিয়া শৃঙ্খলিত করিয়া বন্দীশালায় রাখা হইল, নবাবের বিচারে তাঁহার প্রাণদণ্ডের আদেশ হইল। তখন বদ্ধাবস্থায় সমসেরকে তোপের মুখে উড়াইয়া দেওয়া হয়। বিচিত্র শক্তির পরিচয় দিয়া এইভাবে একটি বিস্ময়কর জীবনের অবসান ঘটিল![১]

  1. রাজমালায় সমসের গাজির বিস্তৃত বিবরণ নাই। কৈলাস সিংহ মহাশয় সমসের গাজিনামা পুস্তক ও অন্যান্য তথ্য হইতে এসম্বন্ধে সুন্দর বিবরণ সংগ্রহ করিয়াছেন। এ আখ্যান তদুপরি রচিত। রাজমালা আফিসে গাজিনামা পুস্তক আছে উহার উপর কালীপ্রসন্ন সেন মহাশয় যে প্রবন্ধ লিথিয়াছেন তাহাও আলোচিত হইল।